ভেনেজুয়েলায় যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপ নিয়ে হোয়াইট হাউসে টানা তৃতীয় দিনের মতো উচ্চপর্যায়ের বৈঠক শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তিনি ‘মোটামুটি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন’। শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) এয়ার ফোর্স ওয়ানে সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘ভেনেজুয়েলা নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, সে বিষয়ে আমি প্রায় মনস্থির করে ফেলেছি, তবে কী সিদ্ধান্ত নিয়েছি তা এ মুহূর্তে বলব না’।
বিষয়টি সম্পর্কে অবগত সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে, হোয়াইট হাউসে টানা তৃতীয় দিনের মতো ট্রাম্প প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, সামরিক ও জ্যেষ্ঠ কর্মীরা এক বৈঠকে ভেনেজুয়েলায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযান নিয়ে আলোচনা করেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ, জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ চেয়ারম্যান ড্যান কেইন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও শুক্রবার ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেন। এর আগে গত বুধবার প্রেসিডেন্টের গোয়েন্দা ব্রিফিংয়ের অংশ হিসেবেও ভেনেজুয়েলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।

সিবিএস নিউজের খবর অনুযায়ী, হেগসেথ, কেইন এবং অন্যান্য সামরিক কর্মকর্তারা বুধবার ট্রাম্পকে ভেনেজুয়েলায় সম্ভাব্য অভিযানের বিভিন্ন বিকল্প উপস্থাপন করেছিলেন, যার মধ্যে স্থলভাগে সম্ভাব্য হামলার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত ছিল। কেইনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবারও প্রেসিডেন্টকে ব্রিফ করেন। শুক্রবারের বৈঠকে আরও বড় পরিসরে আলোচনা হয়।
তবে ভেনেজুয়েলা নিয়ে নিজেদের সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র এখনও মিত্র দেশগুলোকে জানায়নি।
যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই দাবি করে আসছে যে, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো অপরাধী চক্রের সঙ্গে জড়িত, যারা যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচার করে। যদিও মাদুরো এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
গত দুই মাসে মার্কিন সামরিক বাহিনী অন্তত ২১টি জাহাজে হামলা চালিয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পরিবহনের অভিযোগ আনা হয়েছিল। এসব হামলায় অন্তত ৮০ জন নিহত হন।
কিন্তু কিছু পশ্চিম ইউরোপীয় দেশের দাবি, মাদুরোকে সরাসরি অভিযুক্ত করার সুনির্দিষ্ট তথ্য তাদের কাছে নেই। যদিও ২০২০ সালের একটি ফেডারেল অভিযোগপত্রে মাদুরোকে শীর্ষ মাদক পাচারকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সামরিক অভিযান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাঁ-নোয়েল বারো। চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে জি-৭ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ক্যারিবীয় অঞ্চলে সামরিক অভিযান আমরা উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছি, কারণ এটি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।’
এদিকে, চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে মার্কিন নৌবাহিনীর বিমানবাহী রণতরি ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড স্ট্রাইক গ্রুপ ইউএস সাউদার্ন কমান্ডের কার্যনির্বাহী অঞ্চলে প্রবেশ করেছে। ক্যারিবীয় ও দক্ষিণ আমেরিকায় সামরিক অভিযানের জন্য সাউদার্ন কমান্ড হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাথমিক যুদ্ধ ইউনিট।
ফোর্ড ইতিমধ্যেই ওই অঞ্চলে মোতায়েন করা ডেস্ট্রয়ার, যুদ্ধবিমান এবং বিশেষ অভিযান বাহিনীর একটি বহরের সঙ্গে যোগ দিয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন