মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২৫, ১০:৫১ এএম

গাজার ঐতিহাসিক প্রাসাদ ধ্বংস, ওসমানীয় আমলের বিরল প্রত্নবস্তু লুট

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২৫, ১০:৫১ এএম

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে ধ্বংস হয়ে গেছে বহু শতাব্দীর ইতিহাস। মূলত হামাসকে নিশ্চিহ্ন করতে এই আগ্রাসন শুরু করলেও ইসরায়েলি হামলা থেকে রক্ষা পায়নি গাজার ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও। এর ফলে দুই বছরের গাজা যুদ্ধে উপত্যকাটি থেকে হারিয়ে গেছে বা লুট হয়ে গেছে প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে শুরু করে ওসমানীয় আমল পর্যন্ত বিস্তৃত ২০ হাজারের বেশি বিরল প্রত্নবস্তু।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

সোমবার বার্তাসংস্থাটিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের প্রধান ইসমাইল আল-থাওয়াবতে বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের পরিচয় মুছে ফেলতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় প্রত্নস্থলগুলোকে পদ্ধতিগতভাবে ধ্বংস করেছে।’

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গাজা উপত্যকায় ৩১৬টির বেশি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা ও ঐতিহাসিক ভবন পুরোপুরি কিংবা আংশিক ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ধ্বংস হওয়া এই স্থাপনাগুলোর অধিকাংশই মামলুক ও ওসমানীয় আমলের, বাকিগুলো প্রাথমিক ইসলামি যুগ ও বাইজেন্টাইন আমলের।

এই ধ্বংসযজ্ঞে বাদ যায়নি মামলুক আমলে নির্মিত ঐতিহাসিক প্রাসাদ কাসর আল-বাশাও। ইউনেস্কোর তালিকাভুক্ত ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি ৮০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের পুরোনো।

এছাড়া অধিকৃত পশ্চিম তীরের বেথেলহেম সেন্টার ফর কালচারাল হেরিটেজ প্রিজারভেশনের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিশেষজ্ঞ হামুদা আল-দাহদার জানান, গাজার পুরোনো শহরের আল-দারাজ এলাকায় অবস্থিত এই প্রাসাদের ৭০ শতাংশ অংশ ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গত ১০ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এরপর ধ্বংসস্তূপের নিচে ছড়িয়ে থাকা প্রত্নবস্তু খুঁজে বের করতে স্থানীয় টেকনিশিয়ান ও কর্মীরা এখনো দেশিয় যন্ত্রপাতি দিয়ে সেখানে অনুসন্ধান চালাচ্ছেন, যেন গাজার বাকি থাকা ইতিহাসটুকু রক্ষা করা যায়।

থাওয়াবতে বলেন, ‘গাজার ঐতিহ্যের ওপর হামলা চালিয়ে এটা শুধু ধ্বংসই করা হয়নি— এটি ছিল সংগঠিত লুটপাট। আন্তর্জাতিক আইনে যা অপরাধ এবং বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ওপর আঘাত হিসেবে বিবেচিত।’

তিনি জানান, প্রাগৈতিহাসিক সময় থেকে ওসমানীয় যুগ পর্যন্ত বিস্তৃত ২০ হাজারের বেশি প্রত্নবস্তু যুদ্ধের সময় হারিয়ে গেছে। এসব প্রত্নবস্তু স্থানীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত ছিল।

দাহদারও নিশ্চিত করেছেন যে, ঐতিহাসিক এই স্থাপনায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার পর হাজারো বিরল প্রত্নবস্তু উধাও হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ‘প্রতিটি প্রত্নবস্তুই ছিল ইতিহাসের অংশ এবং সেগুলো ফিলিস্তিনের সভ্যতার প্রতিটি অধ্যায়কে তুলে ধরত। এসব লুটপাট জাতীয় পরিচয়কে ক্ষতবিক্ষত করেছে। এটি মানবজাতির সমষ্টিগত ঐতিহ্যের ওপর এক গুরুতর অপরাধ।’

তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৯৪ সালে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের আগে বিভিন্ন সামরিক অভিযানে ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছিল। সেনা প্রত্যাহারের পর ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ প্রাসাদটি সংস্কার করে এটিকে জাদুঘরে রূপান্তর করে।

প্রসঙ্গত, ইসরায়েল ১৯৬৭ সালে গাজা দখল করে এবং ১৯৯৪ সালে অসলো চুক্তি অনুযায়ী সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে। ২০০৫ সালে ‘ডিসএনগেজমেন্ট প্ল্যান’ এর অংশ হিসেবে গাজার বসতি সরিয়ে নেয়।

কিন্তু ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া সর্বশেষ যুদ্ধেও প্রাসাদটি আবার ধ্বংসযজ্ঞ ও লুটপাটের শিকার হয়। একই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৬৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ। বর্বর এই আগ্রাসনে পুরো অঞ্চল এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!