নিউজিল্যান্ড ২০৫০ সালের মধ্যে দেশজুড়ে সব বন্য বা মালিকহীন বিড়াল নির্মূলের পরিকল্পনা করেছে। জীববৈচিত্র্য রক্ষার অংশ হিসেবে শুক্রবার এ ঘোষণা দেন দেশটির সংরক্ষণমন্ত্রী তামা পোতাকা।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্য বিড়ালকে ‘প্রিডেটর-ফ্রি ২০৫০’ প্রকল্পের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। এ তালিকায় কেবল সেসব শিকারি প্রাণীকে রাখা হয় যেগুলো দেশটির অনন্য জীববৈচিত্র্যের জন্য বড় ধরনের হুমকি। ২০১৬ সালে প্রকল্পটি চালুর পর এবারই প্রথম নতুন কোনো শিকারি প্রাণীকে এ-তালিকায় যুক্ত করা হলো।
এরই মধ্যে নিউজিল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে বন্য বিড়াল ধরার ও হত্যা করার অভিযান চলছিল। তবে তালিকাভুক্ত হওয়ায় এবার জাতীয় পর্যায়ের সমন্বিত অভিযান শুরু হবে। থাকছে বৃহৎ আকারের নির্মূল কর্মসূচি, গবেষণা এবং একটি পূর্ণাঙ্গ কৌশল—যা ২০২৬ সালের মার্চে প্রকাশ করা হবে।
দেশটির বনাঞ্চল ও উপকূলীয় দ্বীপগুলোতে বর্তমানে ২৫ লাখের বেশি বন্য বা মালিকহীন বিড়াল রয়েছে। লেজসহ প্রতিটি বিড়ালের দৈর্ঘ্য এক মিটার পর্যন্ত এবং ওজন প্রায় ৭ কেজি। এগুলো নিউজিল্যান্ডের দুর্লভ প্রাণীর জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাকিউরা স্টুয়ার্ট দ্বীপে এই বন্য বিড়াল পুকুনুই বা সাউদার্ন ডটারেল নামের এক বিরল পাখিকে প্রায় বিলুপ্তির পথে ঠেলে দিয়েছে। আবার মাউন্ট রুয়াপেহু অঞ্চলে তারা প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১০০টি বাদুড় শিকার করায় সে প্রজাতিও সংকটে।
রেডিও নিউজিল্যান্ডকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সংরক্ষণমন্ত্রী পোতাকা বন্য বিড়ালকে ‘স্টোন-কোল্ড কিলার’ (নির্দয় হত্যাকারী) হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, “জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে হলে এদের সরিয়ে ফেলা ছাড়া বিকল্প নেই।”
যদিও আগের বছরগুলোতে এ উদ্যোগ নিয়ে তীব্র বিরোধিতা দেখা গেছে—বিশেষ করে ২০১৩ সালে পরিবেশবিদ গ্যারেথ মরগানের ‘ক্যাটস টু গো’ প্রচারণার সময়—তবে পরিস্থিতি বদলেছে। সংরক্ষণ বিভাগের তথ্যমতে, এবার খসড়া পরিকল্পনা নিয়ে জনমতের ৯০ শতাংশই বন্য বিড়াল নির্মূলের পক্ষে মত দিয়েছে।
যদিও গৃহপালিত বিড়াল এ তালিকায় নেই, তবুও এগুলোকেও জীববৈচিত্র্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়। উল্লেখ্য, বিড়াল পালনের দিক থেকে নিউজিল্যান্ড বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর একটি।


