তখন মধ্যরাত। হঠাৎ আক্রমণ করে বসে বন্দুকধারীরা। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন মধ্য নাইজেরিয়ার কৃষক ফিদেলিস আদিদি। সম্বিত ফিরতেই দৌড় দেন অজানার উদ্দেশ্যে। ইয়েলওয়াটা গ্রাম থেকে অরেক দূর পর্যন্ত ধাওয়া করে বন্দুকধারীরা। পরদিন ভোরে ঘরে ফিরে দেখেন দুই স্ত্রীর একজন ও চার সন্তানের দগ্ধ মরদেহ।
গবাদি পশুপালক ও কৃষকদের মধ্যেকার সংঘর্ষের রেশ থেকে পরিবারকে দূরে রাখতে দেশটির মধ্য বেল্ট অঞ্চলের একটি বাজারে ভাড়া বাড়িতে বাস করতেন ফিদেলিস। কিন্তু শুক্রবার (১৩ জুন) রাতে শুরু হওয়া এই হামলায় তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও আরেক সন্তান গুরুতর আহত হয়েছেন।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, বেনু অঞ্চলের শহরে প্রায় ১০০ জন নিহত হয়েছেন।
৩৭ বছর বয়সী এই ব্যক্তি পুড়ে যাওয়া ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমার শরীর দুর্বল ও আমার হৃদয় ক্রমাগত ধুকধুক করছে। আমি আমার পরিবারের পাঁচ সদস্যকে হারিয়েছি।’
বাজারের অন্য একটি কক্ষে খাদ্য ও কৃষি সরঞ্জামের কালো স্তূপের পাশে পুড়ে যাওয়া মরদেহগুলো থাকতে দেখা গেছে। কৃষি জমির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রতিযোগিতা, জাতিগত ও ধর্মীয় বিভাজনের কারণে বছরের পর বছর ধরে চলমান সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষ লড়াই করছে।
সোমবার (১৬ জুন) সাম্প্রতিক এই হামলাকে ‘হতাশাজনক’ বলে অভিহিত করেছেন নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা টিনুবু। আগামীকাল বুধবার বেনুয়ে রাজ্য সফর করবেন তিনি। দুই বছর আগে ক্ষমতায় আসার পর সেখানে তার এটিই প্রথম সফর।
নাইজেরিয়ার জাতীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, তারা সাহায্য সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করছে, যাতে সহিংসতার কারণে বাস্তুচ্যুত কমপক্ষে তিন হাজার মানুষকে সাহায্য করা যায়।
দ্বিতীয়বার গর্ভবতী ও বাজার ব্যবসায়ী তালাতু আগাউতা শুক্রবার রাতে আক্রমণকারীরা আসার পর পালিয়ে যান এবং রাজ্যের রাজধানী মারকুডিতে আশ্রয় নেন। সপ্তাহান্তে তিনি ফিরে এসে দেখেন তার ৪০ বস্তা চাল পুড়ে গেছে। একটি ভয়াবহ আঘাতই কিন্তু তাকে তার বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল না।
তিনি বলেন, ‘আমি ফিরে এসেছি। এখানে মারা গেলেও আমার আপত্তি নেই।’
