ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সংঘাতে সীমান্তবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দারা চরম আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলা, গোলাবর্ষণ ও ড্রোন আক্রমণের কারণে হাজার হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে গ্রাম ও শহর ছাড়ছেন।
অনেকে আশ্রয় নিচ্ছেন বাংকারে, আবার অনেকে খাদ্য ও ওষুধ মজুত করছেন দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের শঙ্কায়।
সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বাংকারে আশ্রয় ও খাদ্য মজুত
ভারত ও পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণরেখার কাছাকাছি এলাকায় বসবাসরত লোকজন গোলাবর্ষণ ও হামলার ভয়ে রাতে বাংকারে আশ্রয় নিচ্ছেন।
পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের নীলম উপত্যকার জুরা বান্দি গ্রামের মঞ্জুর আহমেদ জানান, ‘আশপাশের পাথুরে পাহাড়ে আমরা বাংকার খুঁড়েছি। মুজাফফরাবাদে ভারতের হামলার পর থেকে আমরা এসব বাংকারে থাকছি।’
লাহোরে বাসিন্দারা খাদ্য, রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার ও ওষুধ মজুত করছেন।
ফার্মেসি মালিক মোহাম্মদ আসিফ জানান, ‘অনিশ্চিত পরিস্থিতির কারণে এখন গ্রাহক বেড়ে গেছে। অনেকেই প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনে রাখছেন। এ কারণে প্যারাসিটামল, অ্যান্টি-অ্যালার্জি, অ্যান্টিবায়োটিক, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ওষুধের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।’
বাংকার নির্মাণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা
ভারত সরকার নিয়ন্ত্রণরেখার কাছাকাছি এলাকায় ৫,৫০০টি বাংকার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। রাজৌরি জেলার সাতটি ব্লকে ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় এসব বাংকার নির্মাণ করা হচ্ছে, যাতে সীমান্তবর্তী বাসিন্দারা গোলাবর্ষণ থেকে নিরাপদে থাকতে পারেন ।
পাকিস্তানও সীমান্ত এলাকায় বাংকার নির্মাণ করছে। যদিও কিছু ক্ষেত্রে এই বাংকার নির্মাণকে ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’ বিধি লঙ্ঘন হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে ।
আন্তর্জাতিক উদ্বেগ ও সহায়তা
এই সংঘাতের কারণে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ উভয় দেশকে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। সৌদি আরব ও ইরানও মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে, তবে পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি ।
সীমান্তবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য এটি একটি দুঃস্বপ্নের মতো পরিস্থিতি। তারা বেঁচে থাকার জন্য বাংকারে আশ্রয় নিচ্ছেন, খাদ্য ও ওষুধ মজুত করছেন এবং প্রতিদিনের জীবনযাত্রা চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পার করছেন।