ইসলামাবাদ ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচির অধিকারকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ।
সোমবার (২৬ মে) ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে তেহরানে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক শেষে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি জানান, দুই দেশ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে একযোগে কাজ করবে।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা এপিপি জানায়, বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে শাহবাজ শরিফ বলেন, বৈঠকটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ ও গঠনমূলক হয়েছে।
এতে দুই দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতাসহ বিভিন্ন খাতে সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা হয়। পাশাপাশি পূর্বে স্বাক্ষরিত চুক্তিগুলোর বাস্তবায়ন করার বিষয়েও দুই পক্ষ সম্মত হয়।
ভারতের সঙ্গে সংলাপের আহ্বান
সংবাদ সম্মেলনে শাহবাজ শরিফ জানান, পাকিস্তান আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভারতের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই। আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব।
কাশ্মীরসহ সব বিরোধ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুসারে সমাধান হওয়া উচিত, যা ভারতের সংসদও অতীতে স্বীকার করেছে।’
তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘যদি ভারত আগ্রাসন চালিয়ে যায়, তাহলে পাকিস্তান তার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাধ্য হবে।’
পাকিস্তান-ইরান সম্পর্ক ও সীমান্ত নিরাপত্তা
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও নিরাপত্তা বিষয়ে ঐকমত্যের কথা জানিয়ে শাহবাজ বলেন, ‘ভ্রাতৃপ্রতিম প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমাদের অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও জোরদার করা জরুরি।’
তিনি আরও জানান, সম্প্রতি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ইসলামাবাদে হওয়া বৈঠকে নানা বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান বলেন, পাকিস্তান ইরানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশ এবং দুই দেশের মধ্যে শতাব্দীপ্রাচীন সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক বন্ধন রয়েছে। তিনি সীমান্ত নিরাপত্তা রক্ষায় যৌথ উদ্যোগের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
গাজা পরিস্থিতি ও ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন
ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যা একটি ভয়াবহ রক্তপাতের অধ্যায়। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে টেকসই যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
শাহবাজ বলেন, ‘পাকিস্তান ইরানের পাশে আছে এবং শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য একসঙ্গে কাজ করবে।’
উল্লেখ্য, এ সফরে পাক প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীদের মধ্যে ছিলেন উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির, তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী তারিক ফতিমি।
