মালয়েশিয়ায় সোমবার আয়োজিত শান্তি আলোচনায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া। কিন্তু একদিন না পেরোতেই কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনল থাইল্যান্ড। সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে মঙ্গলবার এ খবর জানানো হয়েছে।
থাই সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা মধ্যরাতের পর গোলাগুলি বন্ধ করলেও কম্বোডিয়ার দিক থেকে বহু স্থানে এখনো গুলিবর্ষণ চলছে। অন্যদিকে, কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির পর থেকে আর কোনো সংঘর্ষ হয়নি।
তবে এই অভিযোগের মধ্যেই উভয় দেশের স্থানীয় সামরিক কমান্ডাররা মঙ্গলবার সকালে বৈঠক করেন। তারা গোলাগুলি বন্ধ রাখাসহ মরদেহ উদ্ধার করতে পারস্পরিক সম্মতির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এর আগে কয়েকদিনের তীব্র সংঘাতের পর সোমবার থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার শীর্ষ নেতারা এক টেবিলে বসেন। মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের পুত্রজায়ায় প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সরকারি বাসভবনে অনুষ্ঠিত হয় এই ঐতিহাসিক বৈঠক। আনোয়ার ইব্রাহিম নিজেই এ আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন। উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের কর্মকর্তারাও, যারা সংঘাত নিরসনে নিজেদের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।
তবে সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, শান্তি আলোচনায় দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও অনিশ্চিতই থেকে যাচ্ছে সংঘাত বন্ধের সম্ভাবনা। বিশ্লেষকরা বলছেন, উভয়পক্ষের সেনা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ থামানো কঠিন হবে। আর যদি চুক্তিও হয়, তবু পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহারে কয়েকদিন সময় লাগবে।
দুই দেশের শতাব্দী পুরোনো সীমান্ত বিরোধ চলতি বছরের মে মাসে আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যখন একটি সংঘর্ষে কম্বোডিয়ার এক সেনা নিহত হয়। এরপর গত সপ্তাহে একটি ল্যান্ডমাইনে পাঁচজন থাই সেনা আহত হলে তা তীব্র সংঘাতে রূপ নেয়।
এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার উভয় দেশের সেনারা গোলাগুলিতে লিপ্ত হয় এবং কম্বোডিয়া থাইল্যান্ডে একাধিক রকেট হামলা চালায়। এই সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৩ জন নিহত এবং হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।