তাইওয়ানের শেষ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পুনরায় চালুর গণভোট বৈধতার সীমা ছুঁতে ব্যর্থ হয়েছে। অবশ্য দ্বীপ দেশটির প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে নিরাপত্তার মান উন্নত হলে দ্বীপটি আবারও এই প্রযুক্তিতে ফিরতে পারে।
শনিবারের (২৩ আগস্ট) গণভোটে বিরোধীদের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, যদি নিশ্চিত হওয়া যায় কোনো নিরাপত্তা ত্রুটি নেই। তবে মানশান বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুনরায় চালু করা উচিত কি না?
গত মে মাসে যখন তাইওয়ান সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছিল, তখনই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বামপন্থি তাইওয়ান পিপলস পার্টি (টিপিপি) চলতি বছরের শুরুতে গণভোটের প্রস্তাব তোলে। পরে বৃহত্তর বিরোধী দল কুওমিনতাংয়ের (কেএমটি) সমর্থন পেয়ে ভোটের অনুমোদন মেলে। তাদের যুক্তি ছিল, তাইওয়ানের নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রয়োজন এবং দেশকে আমদানির ওপর এতটা নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়।
কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুযায়ী, গণভোটে প্রায় ৪৩ লাখ মানুষ বিদ্যুৎকেন্দ্র পুনরায় চালুর পক্ষে ভোট দেন। বিপক্ষে ভোট পড়ে প্রায় ১৫ লাখ। ফলে পক্ষে স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা মিললেও আইন অনুযায়ী এটি যথেষ্ট নয়। প্রস্তাবটি পাশ করতে হলে নিবন্ধিত ভোটারের এক-চতুর্থাংশ, অর্থাৎ প্রায় ৫০ লাখ ভোট প্রয়োজন ছিল।
বিধায় তাইওয়ানের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটি আর খোলা হচ্ছে না।
দেশটির সরকার জানায়, ভূমিকম্পপ্রবণ তাইওয়ানে পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে বড় ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে। এ ছাড়া পারমাণবিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও একটি বড় সমস্যা।
শনিবার রাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে বলেন, গণভোট ব্যর্থ হলেও তিনি সমাজে বিভিন্ন জ্বালানি বিকল্পের প্রত্যাশা বুঝতে পেরেছেন। তিনি জানান, ভবিষ্যতে যদি প্রযুক্তি নিরাপদ হয়, পারমাণবিক বর্জ্য হ্রাস পায় এবং সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে, তবে উন্নত পারমাণবিক শক্তির সম্ভাবনা বাতিল করা হবে না।
এ দিন আরেকটি ভোটে কেএমটির সাত জন বিধায়ককে প্রত্যাহার করার প্রস্তাবও ব্যর্থ হয়েছে। গত মাসে একই দলের ২৪ জন আইনপ্রণেতাকে বহিষ্কারের উদ্যোগও ব্যর্থ হয়েছিল।
ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির সমর্থনে কিছু নাগরিক গোষ্ঠী এই প্রত্যাহার অভিযান চালিয়েছিল। তারা অভিযোগ করেছিল, কেএমটির আইনপ্রণেতারা চীনের খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন এবং ইচ্ছাকৃতভাবে সরকারি ব্যয় ও আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছেন। তবে আইনপ্রণেতারা এই অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছেন।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন