ইরানে চিকিৎসককে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত এক ব্যক্তির জনসম্মুখে ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় কোহগিলুয়ে ও বুয়ের-আহমাদ প্রদেশ কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির ফাঁসি কার্যকর করেছে।
ইরানের বিচার বিভাগ পরিচালিত রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম ‘মিজান’র প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সকালের দিকে কোহগিলুয়ে ও বুয়ের-আহমাদ প্রদেশের রাজধানী ইয়াসুজে ড. দাভুদির হত্যাকারীর বিরুদ্ধে কিসাসের (প্রতিশোধমূলক বিচার) রায় জনসম্মুখে কার্যকর করা হয়েছে।’ ইরানের বিচার বিভাগ বলেছে, ‘রায় কার্যকরের আগে অভিযুক্তের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং সর্বোচ্চ আদালতও মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রেখেছিলেন।’
কোহগিলুয়ে ও বুয়ের-আহমাদ প্রদেশের সরকারি কৌঁসুলি বাহিদ মুসাভিয়ান মিজান অনলাইনকে বলেছেন, ‘সমাজ ও নাগরিকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে চায়, এমন ব্যক্তিদের একটি বার্তা দেওয়ার জন্য জনসম্মুখে এই রায় কার্যকর করা হয়েছে।’
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গত সেপ্টেম্বরে বলেছিল, ইরানে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত অন্তত এক হাজার মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। সংস্থাটি ইরানে মাত্র ৯ মাসে এক হাজার মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের এই ঘটনার নিন্দা জানায়। একই সঙ্গে ফাঁসি কার্যকরের ঘটনাকে দেশটির কারাগারে চালানো ‘গণহত্যার অভিযান’ হিসাবে অভিহিত করে।
ইরানে হত্যা, মাদকপাচার, ধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতনসহ বড় ধরনের অন্যান্য অপরাধের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, বিশ্বে প্রত্যেক বছর চীনের পর সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে ইরান। যদিও দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্ভরযোগ্য কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না।
১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লব এবং ইরান-ইরাক যুদ্ধের পর ১৯৮০-এর দশক ও ১৯৯০-এর দশকের শুরুর দিকে ইরানে বিপুলসংখ্যক মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তবে মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, দেশটিতে গত তিন দশকে এত ব্যাপক সংখ্যক মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা নজিরবিহীন।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন