সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ভিক্টোরিয়া হাই স্কুলে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০২১ (সংশোধিত) উপেক্ষা করে ট্রেড অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে ডিপ্লোমাধারীদের অবৈধ নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশ কর্তৃপক্ষ না মানায় প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ভুক্তভোগী বিভিন্ন অফিসে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২ এপ্রিল সিরাজগঞ্জ থেকে প্রকাশিত দৈনিক যুগের কথা পত্রিকায় অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, ট্রেড অ্যাসিস্ট্যান্ট (জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস) এবং ট্রেড অ্যাসিস্ট্যান্ট (সিভিল কন্সট্রাকশন)— এই তিনটি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
এরপর ২০২৪ সালের ৭ জুন বিদ্যালয়ের স্মারক নম্বর ৩৯৩/২৪ অনুসারে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ট্রেড অ্যাসিস্ট্যান্ট (জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস) পদে তিনজন প্রার্থী নির্বাচিত হন। তারা হলেন, সালেহ আহমেদ সৌরভ (ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং), সাইদুল ইসলাম (এইচএসসি ভোকেশনাল), মাহমুদুল হাসান (এইচএসসি ভোকেশনাল)।
লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে সেদিনই মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং পরদিন চূড়ান্ত ফলাফলে ডিপ্লোমাধারী সালেহ আহমেদ সৌরভ (ইলেকট্রিক্যাল), রজব আলী (সিভিল কন্সট্রাকশন) ও শরিফুল ইসলাম (অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী) এই তিনজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, সংশোধিত এমপিও নীতিমালা ২০২১ অনুযায়ী সেসিপ প্রোগ্রামের আওতায় পরিচালিত ট্রেড অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার নয়, বরং এইচএসসি (ভোকেশনাল) যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থী নিয়োগ পাওয়ার কথা থাকলেও নীতিমালা উপেক্ষা করে পূর্বনির্ধারিত প্রার্থীদের ডিপ্লোমা ডিগ্রির ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এই অনিয়মের প্রতিবাদে চলতি বছরের ২ মার্চ জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করেন বৈধ প্রার্থীরা। আবেদনপত্রে তারা উল্লেখ করেন যে, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় নীতিমালা লঙ্ঘন করে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রার্থীরা ছিলেন “পূর্বনির্ধারিত প্রার্থী”। পরে ন্যায়বিচার না পেয়ে একই বছরের ২ মার্চ বিজ্ঞ আদালতের বিচারক মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও দেবাশীষ রায় চৌধুরী এর আদালতে রিট দায়ের করেন বৈধ প্রার্থী নাইমুর রহমান। রিট মামলার শুনানি শেষে গত ২৮ মে হাইকোর্ট বৈধ প্রার্থীদের নিয়োগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
এরই প্রেক্ষিতে ২৪ আগস্ট জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন রিটকারী প্রার্থীরা। জেলা প্রশাসকের পক্ষে দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মহসিন খন্দকার আবেদন ও সংযুক্ত রিট রায়ের কপি পর্যালোচনা করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) বরাবর রায় বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেন। বিষয়টি জেলা শিক্ষা অফিসে প্রেরণ করা হয় এবং প্রার্থীদেরও অবহিত করা হয়।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজেদুল ইসলাম বলেন, সে সময়ে কর্তৃপক্ষ যাচাই বাছাই করেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারপরেও বঞ্চিত প্রার্থীরা হাইকোর্টে রিট করেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আদেশ দিলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের কাছে হাইকোর্টের রায় এসেছে। আইনানুগভাবে রায় বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষা অফিসকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন