কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল হান্নান। জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন, এমন অভিযোগ এনে তার অস্বভাবিক মৃত্যু হলে এর দায় কটিয়াদী মডেল থানার ওসি তরিকুল ইসলামকে নিতে হবে বলে জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে আচমিতা বাজারে তার নিজস্ব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, একটি মহল আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে গুজব ছড়িয়ে যাচ্ছে।
হান্নান বলেন, ‘আমি আচমিতা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি। ওসি আমাকে গুরুত্ব দেয় না। উনি টাকাকে কেয়ার করেন। আচমিতা ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা মাহতাব উদ্দিন গরম দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় হোটেল ব্যবসার আড়ালে দেহব্যবসা করে আসছেন। তার অনেক টাকা। কিছুদিন আগে উপজেলা প্রশাসন তার হোটেলে অভিযান চালিয়ে দেহব্যবসার সাথে জড়িত যুবক-যুবতীদের গ্রেপ্তার করে। এমনকি হোটেল বন্ধ করে দিয়েছিল। বিভিন্ন মিডিয়াতে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমার ওপর দোষ চাপিয়ে চক্রান্ত করে যাচ্ছে।
মাহতাব উদ্দিন গরম ওসি তরিকুল ইসলামের সাথে মিলে আমাকে হয়রানি করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের এই লোকজন গুম-খুনের সাথে জড়িত। তাদের গাড়ির ভেতর অস্ত্র থাকে। বিষয়টি ওসিকে বলার পরও গুরুত্ব দিচ্ছেন না। আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত থাকা ব্যক্তিদের প্রমাণসহ দেখানো হলেও তিনি (ওসি) ব্যবস্থা নেন না। মাহতাব উদ্দিন গরম আমাকে যেকোনো সময় মেরে ফেলতে পারে। আগামীকাল যদি আমি মারা যাই, আমার পরিবারের কোনো সদস্যের ক্ষতি হয়, তাহলে আপনারা জেনে রাখবেন, এই ঘটনার জন্য মাহতাব উদ্দিন গরম ও কটিয়াদী মডেল থানার ওসি তরিকুল ইসলাম দায়ী থাকবেন। তাদের এই দায় নিতে হবে। আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে বিষয়টি জানিয়ে রাখলাম।’
বিএনপি নেতা আব্দুল হান্নান অভিযোগ করে বলেন, গত ৩ নভেম্বর পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে আচমিতা এলাকার মাসুদ মিয়ার সাথে তারই চাচাতো ভাই শাকিলের ঝগড়া হয়। সে সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাসুদ মিয়া হান্নাকে জড়িয়ে অপপ্রচার করেছে। পরবর্তীতে হান্নানের ছেলে কলেজছাত্র জুনায়েদকে এই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত করে কটিয়াদি থানায় মামলা দায়ের করেন। মারামারির ঘটনায় তার ও ছেলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে স্থানীয় একটি মহল মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত ছাড়াই কটিয়াদী মডেল থানার ওসি তরিকুল ইসলাম এজহারভুক্ত করেছে।
‘২০২১ সালে আচমিতা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার পর থেকে এলাকার একটি মহল আমার বিরুদ্ধে লেগেছে। আমার অপরাধ এলাকার সকল খারাপ কাজে বাধা দেওয়া। ২০২১ সালের পর থেকে আমি ও পরিবারের সদস্যদের মামলা-হামলা লেগেই আছে।’ এ সময় সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
কটিয়াদী মডেল থানার ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। তার সাথে তো আমার কোনো শত্রুতা নাই। তাকে কেউ হুমকি দিয়ে থাকলে থানায় জিডি করতে পারে। তখন আমরা যদি ব্যবস্থা না নেই তাহলে তিনি বলতে পারেন। জিডি করলে তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত কিছুদিন আগে তাদের আত্মীয়দের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। দুই পক্ষই মামলা করেছে। আমরা তদন্ত করছি, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো নিরীহ মানুষ হয়রানির শিকার হবে না।’

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন