বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৫, ০৩:৪৪ পিএম

বিধ্বংসী অস্ত্রভান্ডারে নতুন কী ঝলক আনলেন শি জিনপিং

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৫, ০৩:৪৪ পিএম

চীনের সামরিক কুচকাওয়াজে প্রদর্শন করা হয় আধুনিক সব অস্ত্র। ছবি- সংগৃহীত

চীনের সামরিক কুচকাওয়াজে প্রদর্শন করা হয় আধুনিক সব অস্ত্র। ছবি- সংগৃহীত

চীন তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক কুচকাওয়াজে নতুন আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন এবং হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন করেছে। বুধবার অনুষ্ঠিত এই কুচকাওয়াজে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি এবং জাপানের আত্মসমর্পণের ৮০তম বার্ষিকী স্মরণ করা হয়। এদিকে ইউক্রেনে আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে এই কুচকাওয়াজে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকে পশ্চিমা দেশগুলো। তবে উপস্থিত ছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার কিম জং উনসহ প্রায় ২৬টি দেশের নেতা। সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের এক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে এই কুচকাওয়াজ ও অস্ত্র প্রদর্শনীর বিস্তারিত।

সামরিক বাজেট ও প্রদর্শিত আধুনিক অস্ত্র

চলতি বছর প্রতিরক্ষা খাতে প্রায় ১৮৬ বিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দ করা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশ উন্মোচন করেছে—হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র, পারমাণবিক ‘ট্রায়াড’, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র, অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম, কৌশলগত বোমারু বিমান, স্টেলথ ড্রোন। এসবের বেশিরভাগই প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে আনা হয়।

প্যারেডের শুরুতে জাপানের আত্মসমর্পণের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে ৮০ রাউন্ড কামানের গোলা ছোঁড়া হয়। এরপর বড় ব্যানার টেনে নিয়ে আকাশে উড়ে যায় হেলিকপ্টার। প্যারেড শেষ হয় ৮০ হাজার শান্তির পায়রা ও বর্ণিল বেলুন উড়িয়ে।

শি জিনপিংয়ের ভাষণ

শি জিনপিং সতর্ক করে বলেন, ‘বিশ্বকে শান্তি ও যুদ্ধের মধ্যে একটি পথ বেছে নিতে হবে।’ সামরিক বাহিনীর কুচকাওয়াজ শুরুর আগে তিনি একটি কালো লিমুজিন গাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে সৈন্যদের অভিবাদন জানান। প্রথমবারের মতো প্যারেডে অংশ নেয় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর পাশাপাশি সাইবারস্পেস ইউনিট।

বিধ্বংসী অস্ত্রের উন্মোচন

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস জানায়, প্রদর্শিত অস্ত্রের মধ্যে ছিল—হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র, যা সমুদ্রে থাকা জাহাজকে আঘাত হানতে সক্ষম; তরল জ্বালানিচালিত আন্তঃমহাদেশীয় কৌশলগত পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র, যা পৃথিবীর যেকোনো স্থানে হামলা করতে পারে; স্পেস ডিফেন্স সিস্টেম, যা বিদেশি স্যাটেলাইট ধ্বংস করতে সক্ষম। এসব অস্ত্র বিশেষ করে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে টহলরত মার্কিন সপ্তম নৌবহরের জন্য উদ্বেগজনক।

হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র (ওয়াইজে সিরিজ)

চীন নতুন ওয়াইজে-১৫ ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করে, পাশাপাশি আগের ওয়াইজে-১৭, ওয়াইজে-১৯ এবং ওয়াইজে-২০ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রও দেখানো হয়। ‘ইয়িং জি’ বা ‘ঈগল অ্যাটাক’ নামের এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো জাহাজ বা বিমান থেকে ছোঁড়া যায় এবং বড় ধরনের জাহাজ ধ্বংস করার মতো ক্ষমতা রাখে।

পানির নিচের ড্রোন

চীন দুটি বড় আকারের মানববিহীন পানির নিচের যান (এক্সএলইউইউভি) প্রদর্শন করে। এর মধ্যে এজেএক্স০০২ সি ড্রোন প্রায় ৬০ ফুট লম্বা বলে ধারণা করা হচ্ছে। টর্পেডো আকৃতির এই যানগুলোতে স্টেলথ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।

পারমাণু-সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র

চীন প্রথমবারের মতো তিন ধরনের পারমাণবিক সক্ষম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করে—ডং ফেং-৬১ (ডিএফ-৬১), ডং ফেং-৩১বিজে (ডিএফ-৩১বিজে) এবং ডং ফেং-৫সি (ডিএফ-৫সি)।

এছাড়া আকাশ থেকে আঘাত হানতে সক্ষম পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র জেএল-১ উন্মোচন করা হয়। জেএল-১ ও জেএল-৩ একসঙ্গে ডিএফ-৬১ ও ডিএফ-৩১-এর সঙ্গে মিলিয়ে চীনের ‘স্থল, সমুদ্র ও আকাশভিত্তিক পারমাণবিক ট্রায়াড’ প্রথমবার একত্রে প্রদর্শন করা হয়।

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, ডিএফ-৫সি ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ২০ হাজার কিলোমিটারের বেশি এবং এটি একসঙ্গে ১২টি ওয়ারহেড বহন করতে সক্ষম।

স্পেস ডিফেন্স সিস্টেম

প্রথমবারের মতো উন্মোচন করা হয় এইচকিউ-২৯ স্পেস ডিফেন্স সিস্টেম, যা বিদেশি স্যাটেলাইট ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে। এটি ছিল প্যারেডের অন্যতম আকর্ষণীয় প্রদর্শনী।

এই জমকালো আয়োজনে প্রায় ৫০ হাজার দর্শকের সামনে সেনারা কুচকাওয়াজে অংশ নেন।

সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইয়ান চং বলেন, ‘শি মূলত দেখাতে চাইছেন, তার নেতৃত্বে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন এখন এক পরাশক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। পাশাপাশি এত নেতার উপস্থিতি বার্তা দিচ্ছে যে, চীনকে বিচ্ছিন্ন করা যাবে না এবং বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের চাপ বা হুমকিকেও তারা ভয় পায় না।’

Link copied!