ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই, ২০২৫

কার্টুনে মুহাম্মদ (সা.)-কে ব্যঙ্গ করার অভিযোগে অশান্ত তুরস্ক

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১, ২০২৫, ০৮:৪০ পিএম
সোমবার বিক্ষোভকারী ও পুলিশের সংঘর্ষ হয়।ছবি- সংগৃহীত

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে একটি ব্যঙ্গাত্মক পত্রিকায় হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে অবমাননা করে কার্টুন প্রকাশের অভিযোগ ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ‘লে মান’ নামের জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যঙ্গপত্র, যা দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কিত অবস্থানে রয়েছে।

অভিযোগ অনুযায়ী, কার্টুনে নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে ব্যঙ্গ করা হয়েছে। এর জেরে ইস্তাম্বুলের প্রধান কৌঁসুলি ‘লে মান’-এর প্রধান সম্পাদক তুনচাই আকগুনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। আটক করা হয়েছে পত্রিকার চিত্রকর ও গ্রাফিক ডিজাইনারকেও।

ঘটনার পর সোমবার সন্ধ্যায় উত্তেজিত জনতা পত্রিকাটির সাংবাদিকদের নিয়মিত যাতায়াতের একটি বারে হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে। 

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সংঘর্ষে ২৫০ থেকে ৩০০ জনের মতো মানুষ জড়িত ছিল।

তবে পত্রিকাটির প্রধান সম্পাদক তুনচাই আকগুন দাবি করেছেন, ওই কার্টুনে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কোনো চিত্র ব্যবহৃত হয়নি। বরং এটি ফিলিস্তিনের এক মুসলিম শিশুর ‘মুহাম্মদ’ নামকে প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করে তৈরি চিত্র।

তিনি বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষের নাম মুহাম্মদ। এটি ধর্ম অবমাননার উদ্দেশ্যে করা হয়নি।’

সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘লে মান’ রাজনৈতিক ব্যঙ্গচিত্রের জন্য পরিচিত। ২০১৫ সালে ফরাসি ব্যঙ্গপত্র শার্লি হেবদো-র প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থন জানানোয় পত্রিকাটি তুরস্কের রক্ষণশীল মহলে সমালোচিত হয়ে ওঠে।

ঘটনার পর তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলি ইয়েরলিকায়া বলেন, ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। এ ঘটনায় আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তবে ‘লে মান’ তাদের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যায় জানিয়েছে, কার্টুনটির উদ্দেশ্য ছিল ইসরায়েলের হাতে নিহত মুসলিমদের প্রতি সংহতি জানানো।

তারা আরও দাবি করেছে, কার্টুনটিকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিকৃত করে প্রচার করা হয়েছে।

তুরস্কের বিচারমন্ত্রী ও ইস্তাম্বুলের গভর্নর দু’জনই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, দেশের ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর আঘাত মেনে নেওয়া হবে না। বর্তমানে পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে।