মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ককে লক্ষ্য করে তির্যক মন্তব্য করেছেন। মঙ্গলবার (১ জুলাই) তিনি দাবি করেন, বৈদ্যুতিক যানবাহনের ওপর ফেডারেল ভর্তুকি না থাকলে মাস্কের ব্যবসা টিকত না এবং তিনি ‘দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে যেতে বাধ্য হতেন’।
ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘ইতিহাসের যেকোনো ব্যক্তির চেয়ে ইলন মাস্ক সম্ভবত বেশি ভর্তুকি পেয়েছেন। ভর্তুকি না থাকলে, তাকে দোকান বন্ধ করে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে যেতে হতো।’
ট্রাম্পের এই মন্তব্য মাস্কের সাম্প্রতিক সমালোচনার জবাব হিসেবে এসেছে। মাস্ক সম্প্রতি রিপাবলিকান পার্টির আর্থিক ব্যয় কমানোর প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে ‘বিগ, বিউটিফুল বিল’ সমর্থনের কড়া সমালোচনা করেন।
তার মতে, এই বিলের অধীনে ইভি ও ক্লিন এনার্জি খাতে ভর্তুকি কমানো হলে, তা হবে ‘অবিশ্বাস্যভাবে ধ্বংসাত্মক’ এবং রিপাবলিকানদের জন্য ‘রাজনৈতিক আত্মহত্যা’।
এদিকে ট্রাম্প বলেন, ‘ইলন মাস্ক আমাকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে সমর্থনের অনেক আগেই জানতেন যে আমি বাধ্যতামূলক ইভি নীতির ঘোর বিরোধী। বৈদ্যুতিক গাড়ি ঠিক আছে, কিন্তু কাউকে গাড়ি কেনার জন্য বাধ্য করা উচিত নয়। এটি সবসময়ই আমার প্রচারণার একটি প্রধান অংশ ছিল।’
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো আইন নাগরিকদের বৈদ্যুতিক গাড়ি কিনতে বাধ্য করে না। তবে পরিবেশবান্ধব যানবাহন কেনায় সরকার ভর্তুকি ও কর রেয়াত দিয়ে উৎসাহ প্রদান করে থাকে।
একই দিন, মাস্ক তার সোশ্যাল হ্যান্ডেল এক্সে লিখে রিপাবলিকানদের সমালোচনা করে বলেন, যারা খরচ কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন অথচ বিল সমর্থন করেছেন, তাদের ‘লজ্জায় মাথা নিচু করা উচিত’। তিনি সতর্ক করেন যে, তারা আগামী নির্বাচনের প্রাইমারিতেই পরাজিত হবেন।
ট্রাম্প তার পোস্টে মাস্কের নেতৃত্বাধীন স্পেসএক্সের সঙ্গেও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের লাভজনক চুক্তির দিকে ইঙ্গিত করে লেখেন, ‘আর কোনো রকেট উৎক্ষেপণ, উপগ্রহ, কিংবা বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদন নয়। এতে আমাদের দেশ অনেক টাকা সাশ্রয় করতে পারত। সম্ভবত আমাদের উচিত ডজ (ডিপার্টমেন্ট অব গভর্মেন্ট এফিশিয়েন্সি) দিয়ে এটি খতিয়ে দেখা। অনেক অর্থ বাঁচানো সম্ভব!’
ডজ হচ্ছে মাস্ক-প্রস্তাবিত একটি অনানুষ্ঠানিক ‘সরকারি দক্ষতা সংস্থা’ যা সরকারি ব্যয় হ্রাস ও দক্ষতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিলেও, কর্মী ছাঁটাই, দুর্বল পুনর্নিয়োগ এবং অপ্রমাণিত সঞ্চয় দাবি করে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে।
মে মাসে মাস্ক সরকারের ওই পদ থেকে সরে দাঁড়ান। এর পর থেকেই ট্রাম্প ও মাস্কের মধ্যে অনলাইনে পারস্পরিক আক্রমণ তীব্রতর হয়। ইভি ভর্তুকি ইস্যুতে তাদের এই তিক্ততা যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পনীতি ও রাজনীতিতে বহুমাত্রিক প্রতিক্রিয়া তৈরি করছে।