বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই গণতন্ত্র ধসে পড়েছে। গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে কাজ করা স্টকহোমের ‘ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ডেমোক্র্যাসি অ্যান্ড ইলেকটোরাল’র এক গবেষণায় বিষয়টি উঠে এসেছে । সংস্থাটি ২০২৪ সালে বিশ্বের ১৭৪টি দেশের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে।
সংবাদমাধ্যম ‘ডি ডব্লিউ’ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করে।
সংস্থাটির পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, বিশ্বে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, মানুষের অধিকার এবং নির্বাচনের স্বচ্ছতা কমেছে। ফলে অনেক দেশেই গণতন্ত্রের চেয়ে স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা জেঁকে বসেছে।
গ্লোবাল স্টেট অফ ডেমোক্রেসি ২০২৫ নামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ৯৪টি দেশে ২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত গণতান্ত্রিক সূচকের অন্তত একটিতে অবনমন ঘটেছে৷ অবশ্য এক তৃতীয়াংশ দেশে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। সংস্থাটির মহাসচিব কেভিন কাসাস-জামোরা বলেন, ‘বিশ্বে বর্তমান গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।’
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে যে জায়গাগুলোতে সবচেয়ে বেশি অবনমন ঘটেছে তা হলো বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজন, বিচারব্যবস্থায় অংশগ্রহণের সুযোগ, এবং কার্যকর সংসদের অভাব। অঞ্চলভেদে সবচেয়ে বেশি অবনমন ঘটেছে আফ্রিকা মহাদেশে, ৩৩ ভাগ৷ এরপরে আছে ইউরোপ যেখানে ২৫ ভাগ অবনতি হয়েছে৷ পরিস্থিতির সবচেয়ে বেশি অবনতি হয়েছে পশ্চিম এশিয়াতে।
ইতিবাচক ও নেতিবাচক ধারা
বেশিরভাগ দেশে গণতন্ত্রের অবনতি হলেও প্রতিবেদনে কিছু ইতিবাচক বিষয়ও উঠে এসেছে। যেমন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে আফ্রিকার দেশ বতসোয়ানা এবং সাউথ আফ্রিকার নাম উঠে এসেছে। ২০২৪ সালে সর্বশেষ নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে দেশ দুটিতে ঐতিহাসিক পরিবর্তনের ধারা লক্ষ্য করা গিয়েছে।
ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ডেনমার্কই একমাত্র দেশ যেটি চারটি সূচকে ইতিবাচক ধারা ধরে রাখা প্রথম পাঁচটি দেশের মধ্যে নিজেদের তালিকাভুক্ত করতে পেরেছে৷ সূচক চারটি হলো- প্রতিনিধিত্ব, আইনের শাসন, অংশগ্রহণ এবং অধিকার।
ভালো ফলাফলে এগিয়ে আছে জার্মানি, সুইজারল্যান্ড এবং লুক্সেমবার্গ৷ এদিকে চিলি, কোস্টারিকা, অস্ট্রেলিয়াও সূচকগুলোতে উন্নতি করেছে।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ৫০ বছরে সর্বনিম্ন
২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে গত ৫০ বছরের মধ্যে গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় সবচেয়ে বেশি অবনমবন ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাসচিব কেভেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের মোট ৪৩টি দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কমে গেছে৷ এরমধ্যে রয়েছে আফ্রিকা মহাদেশের ১৫টি এবং ইউরোপের ১৫টি দেশ।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সবচেয়ে বেশি অবনমন ঘটেছে এমন দেশের তালিকায় রয়েছে এশিয়ার দেশ আফগানিস্তান, মিয়ানমার এবং আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসো। এই তালিকায় আরেও রয়েছে এশিয়ার আরেক দেশ দক্ষিণ কোরিয়া।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতার অবনমন ঘটার কারণ হিসেবে কেভেন মূলত ‘সরকারের পক্ষ থেকে মারাত্মক হস্তক্ষেপ, মহামারি পরবর্তী সময়ের পরিস্থিতি এবং ভুলতথ্য ছড়ানোকে দায়ী করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্রের অবনমন
প্রতিবেদনে বলা হয়, চারটি সূচকের মধ্যে প্রতিনিধিত্ব সূচকে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৩৫ এবং অধিকারের ক্ষেত্রে ৩২। প্রতিবেদনটিতে অবশ্য গত জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের আগের সময়ের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে৷ তবে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর তার সরকারের কিছু পদক্ষেপকে উদাহরণ বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন বলছে, অর্গানাইজেশন অব ইকোনোমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টেরঅনেক দেশের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কেবল ‘অংশগ্রহণ’সূচকে দেশটি সবচেয়ে ভালো ফলাফল করেছে। এই সূচকে ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে দেশটি।

 
                             
                                    

-20250911174456.webp)
 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন