ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে এবার তার নিজের দেশের রাজনীতিকরাই সরব। কেউই বলছেন না যে ভারত যুদ্ধে জিতেছে। বরং তারা বলছেন, এই যুদ্ধে ভারত হেরেছে।
পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতে মোদির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস, শিবসেনা, এমনকি কিছু নিরপেক্ষ বিশ্লেষকরাও।
শনিবার (১০ মে) পাকিস্তানের হামলার পর ভারত পাল্টা জবাব না দিয়ে চুপ করে বসে ছিল। এ নিয়েই সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হচ্ছে। পরে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ায় মোদির নেতৃত্ব নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
ভারতের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে চরম ক্ষোভ। অনেকে মোদিকে একরকম ‘পরাজিত নেতা’ বলেই অভিহিত করছেন। শিক্ষাবিদরাও বলছেন, এই যুদ্ধ রাজনৈতিকভাবে বিজেপির আদর্শকেই প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
এসব সমালোচনার মধ্যেই সোমবার (১২ মে) রাত ৮টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন মোদি। তিনি জানান, ‘অপারেশন সিঁদুর’ এখনো শেষ হয়নি। তিনি দাবি করেন, পাকিস্তান ভারতের সেনার কাছে মার খেয়ে যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করেছে।
কিন্তু ভাষণে তার শরীরী ভাষা ও কণ্ঠের জোরে আত্মবিশ্বাসের অভাব ছিল বলে মন্তব্য এসেছে পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও।
পাকিস্তানের সিনেটর ইরফান সিদ্দিকী বলেন, মোদির চেহারা দেখে মনে হয়েছে তিনি এক পরাজিত নেতা। এমনকি ভারতেরই দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অপূর্বানন্দ বলেন, মোদি শুধু সামরিকভাবে নয়, আদর্শিকভাবেও পরাজিত হয়েছেন। ভারতের সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষ হলেও বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি এই সংকট তৈরি করেছে।
এরই মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ে (ডিজিএমও স্তরে) বৈঠক হয়। এতে দুই দেশ প্রতিশ্রুতি দেয়, আর কোনো হামলা চালাবে না, ড্রোনও পাঠাবে না। বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে ছিলেন লে. জেনারেল রাজীব ঘাই এবং পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন মেজর জেনারেল কাশিফ আবদুল্লাহ।
পাকিস্তান দাবি করেছে, যুদ্ধবিরতির জন্য ভারতই অনুরোধ করেছে। পাকিস্তান কখনো অনুরোধ করেনি। পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র বলেন, ৬ ও ৭ মে ভারতের হামলার পর ১০ মে আমরা প্রতিশোধ নেই। তারপর আন্তর্জাতিক চাপে পাকিস্তান ভারতের প্রস্তাবে সাড়া দেয়।
এ ছাড়া তিনি জানান, ভারতীয় পাইলট আটক হওয়ার খবর সঠিক নয়, তা ছিল সম্পূর্ণ গুজব।
যদিও উভয় পক্ষ যুদ্ধ শেষ বলে জানালেও রাজনৈতিকভাবে এই যুদ্ধের প্রতিক্রিয়া এখনো থামেনি। মোদির বক্তব্য নিয়ে এখন প্রশ্ন তুলছে গোটা ভারত।
আপনার মতামত লিখুন :