পূজা? সে তো সৃষ্টিকর্তার প্রতি স্রষ্টার অসীম কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু সেটা যদি হয়, মানবসৃষ্ট ইলেকিট্রিক্যাল যন্ত্রের প্রতি। তখন তো বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতেই পারে।
নতুন বৈদ্যুতিক সংযোগ গ্রামবাসীর জন্য অত্যন্ত আনন্দের। শুধু কি তাই? নতুন ট্রান্সফরমারও যে উল্লাসের মাত্রা আনতে পারে- তা দেখিয়ে দিলেন গান্ধীনগর গ্রামের বাসিন্দারা।
দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে চলা পুরনো ট্রান্সফরমার পুড়ে যাওয়ার পর অবশেষে নতুন ট্রান্সফরমার পাওয়ায় এই উল্লাস ভারতের মধ্যপ্রদেশের ভিন্দ জেলার গান্ধীনগর গ্রামে। আর নতুন ট্রান্সফরমার গ্রামে আসা মাত্রই সমস্ত গ্রামবাসী মিলে পূজা করেন।
নতুন ট্রান্সফরমারের ‘দীর্ঘায়ু’ কামনা করে স্থানীয় বাসিন্দারা শুধু পূজা নয়, বরং আরতি ও মিষ্টি বিতরণের মাধ্যমে রীতিমতো এক অভিনব উৎসবের আয়োজন করেছেন গ্রামজুড়ে।
জানা গেছে, প্রচণ্ড গরমের মধ্যে বিদ্যুৎ সংকটে চরম ভোগান্তির মধ্যে ছিলেন গ্রামবাসীরা। পুরনো ট্রান্সফরমারটি পুড়ে যাওয়ায় দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকতে হয়েছিল তাদের। খবর পেয়ে স্থানীয় বিধায়ক নরেন্দ্র সিং কুশওয়াহাকে জানানো হয়। তিনিও দ্রুত ব্যবস্থা নেন এবং মাত্র দু’ঘণ্টার মধ্যে নতুন ট্রান্সফরমার এসে যায়।

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্তাদের গাফিলতির ফলে বারবার সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তাই তারা এবার আর দেরি না করে নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে ট্রান্সফরমারটির মঙ্গল কামনায় পূজা ও আরতি করেছেন।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা বিদ্যুৎ দপ্তরের ওপর আর ভরসা করতে পারি না। ট্রান্সফরমার খারাপ হলে সাধারণত ১০ থেকে ১৫ দিন লেগে যায় নতুন ট্রান্সফরমার বসাতে। তার ওপর বারবার অফিসে ঘুরতে হয়। তাই এবার আমরা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছি, যাতে এই নতুন ট্রান্সফরমার বহুদিন চলে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই অভিনব আয়োজনের ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই নেটিজেনদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
অনেকের মত, স্থানীয় প্রশাসনের গাফিলতির ফলে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গ্রামবাসীরা। আবার অনেকের মন্তব্য, আস্থা ও ভক্তি থেকেই এই পূজা করছেন গ্রামবাসীরা।