ঢাকা শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫

পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানি চুক্তি পুনর্বহাল করবে না ভারত

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২১, ২০২৫, ০৬:৪৮ পিএম
পাকিস্তানের হায়দ্রাবাদে সিন্ধু নদে চাষযোগ্য জমির পাশ দিয়ে মানুষ হেঁটে যাচ্ছে। ছবি- সংগৃহীত

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক তিনটি নদীর পানিবণ্টন নিয়ে স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানি চুক্তি পুনর্বহাল করবে না বলে সাফ জানিয়েছে ভারত। এমনকি পাকিস্তানে প্রবাহিত পানি এখন দেশের ভেতরে ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

শনিবার (২১ জুন) টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি। এ ঘোষণার পর, এই চুক্তি পুনর্বহাল নিয়ে পাকিস্তানে যে আশাবাদ ছিল তাও ফিকে হয়ে গেল।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ইসলামাবাদের সঙ্গে সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি আর কখনো পুনর্বহাল করা হবে না। পাকিস্তানে যে পানি যাচ্ছিল, তা অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য সরিয়ে নেওয়া হবে।

এর আগে, ১৯৬০ সালের এই চুক্তির আওতায় ভারত ও পাকিস্তান সিন্ধু নদী ব্যবস্থার পানি ব্যবহার করছিল। কিন্তু গত এপ্রিলে ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে এক হামলায় ২৬ বেসামরিক নাগরিক নিহতের ঘটনায় নয়াদিল্লি পাকিস্তানকে দায়ী করছে, যদিও ইসলামাবাদ জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে।

নয়াদিল্লি পেহেলগামের ওই ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে উল্লেখ করে চুক্তি থেকে নিজেদের অংশগ্রহণ ‘স্থগিত’ করে।

এই চুক্তির আওতায় পাকিস্তান তার কৃষিকাজের জন্য ভারত থেকে উৎপন্ন তিনটি নদীর পানি ব্যবহার করতে পারত। এর ফলে পাকিস্তানের প্রায় ৮০ শতাংশ কৃষিজমিতে পানি সরবরাহ হতো।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির পরও দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমেনি এবং এখন পর্যন্ত চুক্তি নিয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি।

অমিত শাহ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এই চুক্তি আর কখনোই চালু হবে না। আমরা এখন পাকিস্তানে প্রবাহিত পানি রাজস্থানে নিয়ে যাব। পাকিস্তান অন্যায়ভাবে যে পানি পাচ্ছে, তা পাবে না– ওরা তেষ্টায় কষ্ট পাবে।’

এই মন্তব্যের ফলে ইসলামাবাদ যে চুক্তি নিয়ে আবার আলোচনা হবে বলে আশা করছিল, সেটিও অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে গেছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে সঙ্গে সঙ্গে সাড়া দেয়নি।

এর আগেও ভারতের পরিকল্পনা ছিল, পাকিস্তানের খামারগুলোতে পানি সরবরাহ করে এমন নদী থেকে নিজেরা আরও বেশি পানি তুলে নেওয়া। পাকিস্তান এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বলেছে, একতরফাভাবে চুক্তি থেকে সরে আসা সম্ভব নয়। এমনকি তারা এটিকে যুদ্ধের ইঙ্গিত বলেও দেখছে।

পাকিস্তান জানিয়েছে, তারা ভারতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও ভাবছে।