ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের তিরুমালার শ্রী ভেঙ্কটেশ্বর মন্দিরের তত্ত্বাবধানকারী প্রশাসনিক সংস্থা তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থানম (টিটিডি) চার কর্মচারীকে বরখাস্ত করেছে। অভিযোগ, তারা হিন্দু ধর্ম ছাড়া অন্য ধর্ম অনুসরণ করছিল, যা প্রতিষ্ঠানের আচরণবিধির সরাসরি লঙ্ঘন।
শনিবার (১৯ জুলাই) তাদের বরখাস্ত করা হয় বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
টিটিডির প্রধান জনসংযোগ আধিকারিকের (সিপিআরও) জারি করা এক বিবৃতি অনুসারে, চার ব্যক্তি বি. এলিজার (উপ-নির্বাহী প্রকৌশলী, মান নিয়ন্ত্রণ), এস. রোজি (স্টাফ নার্স, বিআইআরআরডি হাসপাতাল), এম. প্রেমাবতী (গ্রেড-১ ফার্মাসিস্ট, বিআইআরআরডি হাসপাতাল) এবং ডা. জি. আসুন্তাকে (এসভি আয়ুর্বেদিক ফার্মেসি) অভ্যন্তরীণ তদন্তের পর বরখাস্ত করা হয়েছে।
তিরুমালার বিশ্বখ্যাত শ্রী ভেঙ্কটেশ্বর মন্দির পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে টিটিডি। এই সংগঠন কর্মচারীদের জন্য বিশেষ করে ধর্মীয় বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের জন্য কঠোর আচরণবিধি অনুসরণ করে। এই কোডটি নির্দেশ করে যে, টিটিডি ব্যবস্থার মধ্যে নিযুক্ত ব্যক্তিদের আচরণ এবং অনুশীলন উভয় ক্ষেত্রেই হিন্দু ধর্মের নীতি মেনে চলতে হবে।
একটি ভিজিল্যান্স রিপোর্টে কর্মচারীদের ধর্মীয় সম্পৃক্ততা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পর এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অভ্যন্তরীণ তদন্তে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, বরখাস্ত হওয়া কর্মীরা হিন্দু ব্য়তীত অন্য ধর্ম অনুসরণ করছিলেন, যা প্রাতিষ্ঠানিক নির্দেশিকা লঙ্ঘন বলে বিবেচিত হয়েছিল।
সিপিআরও-র বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, একটি হিন্দু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালনের সময় কর্মচারীরা দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করেছিলেন। প্রমাণ পর্যালোচনা এবং ভিজিল্যান্স বিভাগের প্রতিবেদনের পর, ‘নিয়ম অনুসারে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং চার কর্মচারীকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।’
শাস্তির ফলে ভারত সরকারের অর্থে চলা ধর্মভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ধর্মীয় স্বাধীনতার সীমা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। যদিও টিটিডি আর কোনো মন্তব্য করেনি। তবে কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, প্রতিষ্ঠানের আধ্যাত্মিক নীতিমালা মেনে চলা কর্মীদের বাধ্যতামূলক।
বিষয়টি ভারতের মন্দির প্রশাসন ব্যবস্থায় কর্মসংস্থান অধিকার বনাম ধর্মীয় নির্দেশিকা নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিতে পারে।
এর আগে ১১ জুলাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বান্দি সঞ্জয় কুমার তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থানমকে তিরুমালায় অ-হিন্দুদের চাকরি থেকে অপসারণের আহ্বান জানিয়েছিলেন। সে সময় তিনি দাবি করেছিলেন, টিটিডি-তে এখনও ১ হাজারের বেশি অ-হিন্দু কর্মরত রয়েছেন।