ডিজিটাল যুগে তথ্যের অবাধ প্রবাহ আশীর্বাদের পাশাপাশি অভিশাপও বটে। সম্প্রতি তামিলনাড়ুতে ইউটিউব ভিডিও দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে শুধুমাত্র ফলের রসের ডায়েট অনুসরণ করতে গিয়ে এক ১৭ বছর বয়সি কিশোরের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনা সামাজিক মাধ্যমের অপব্যবহার এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ভুল তথ্যের ভয়াবহ পরিণতিকে আরও একবার সামনে নিয়ে এসেছে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে গালফ নিউজ।
তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারী জেলার কোলাচেল এলাকার বাসিন্দা ওই কিশোর একটি ইউটিউব চ্যানেলের ‘স্বাস্থ্য উন্নয়ন’ সংক্রান্ত ভিডিও দেখে প্রভাবিত হয়। এরপর সে কঠিন খাবার পুরোপুরি ত্যাগ করে এবং টানা তিন মাস শুধুমাত্র ফলের রসের উপর নির্ভর করে জীবনধারণ করতে শুরু করে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, এই কঠোর ডায়েটের ফলে তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটতে থাকে।
তিন মাস পর যখন সে পুনরায় স্বাভাবিক খাবার খাওয়ার চেষ্টা করে তখন তার শরীরে মারাত্মক জটিলতা দেখা দেয়। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকালে তাকে তার বাড়িতে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায় এবং দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চিকিৎসকদের মতে, দীর্ঘ সময় ধরে শুধুমাত্র রস পানের ফলে শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির চরম ঘাটতি দেখা দেয়, যা তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়। এর ফলেই স্বাভাবিক খাবারে ফেরার চেষ্টা তার জন্য প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে।
এই দুঃখজনক ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই এজন্য ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মে যাচাইবিহীন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যের ছড়াছড়িকে দায়ী করেছেন। তবে কেউ কেউ সন্তানের অনলাইন কার্যকলাপের প্রতি নজর না রাখায় অভিভাবকদেরও সমালোচনা করছেন।
পুলিশ এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা করছে, যা মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ধারণে সাহায্য করবে। তবে কিশোরের পরিবার জোরালোভাবে দাবি করছে যে, এই ইউটিউব-অনুপ্রাণিত ডায়েটই তার মৃত্যুর জন্য দায়ী।
বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরেই শুধুমাত্র জুসভিত্তিক ডায়েটের বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে আসছেন। এই ধরনের ডায়েটে প্রয়োজনীয় ফাইবার, প্রোটিন এবং ফ্যাটের মারাত্মক ঘাটতি দেখা যায়, যা হজমের সমস্যা থেকে শুরু করে শারীরিক দুর্বলতার কারণ হতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :