শুক্রবার, ০৮ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২৫, ০৬:২৩ পিএম

ভারতে ‘বাংলাদেশি’ ধরতে বস্তিতে অভিযান, মুসলিম-বাংলাভাষী হলেই বিপদ

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২৫, ০৬:২৩ পিএম

অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে চলমান অভিযানের মধ্যে ভারতের হাজার হাজার বাঙালি-মুসলিম পরিবার অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি। ছবি- বিবিসি

অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে চলমান অভিযানের মধ্যে ভারতের হাজার হাজার বাঙালি-মুসলিম পরিবার অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি। ছবি- বিবিসি

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির পাশেই অভিজাত শহর গুরগাঁও। আধুনিক সুউচ্চ ভবন আর পরিপাটি অ্যাপার্টমেন্টের পাশেই মশার ঝাঁক, আবর্জনার স্তূপ আর বস্তি। উঁচু প্রাচীরঘেরা কমপ্লেক্সে থাকেন ভারতের ধনী বাসিন্দারা, আর কাছের বস্তিগুলোয় থাকেন দরিদ্র শ্রমিক—মূলত গৃহকর্মী, ময়লা সংগ্রহকারী ও দিনমজুর, যারা এই আধুনিকতাকে সচল রাখেন।

গত মাসে স্থানীয় প্রশাসন ‘অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী’ শনাক্তের নামে গুরগাঁওয়ে একটি অভিযান চালায়। অভিযানে শত শত শ্রমিককে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তিদেরকে নাগরিকত্ব প্রমাণের কাগজপত্রও দিতে বলা হয়। তবে অধিকাংশই দাবি করছেন, তারা পশ্চিমবঙ্গের বাংলা ভাষাভাষী মুসলিম। এ সময় তাদের মারধর করেছে বলে দাবি করা হলেও পুলিশ তা অস্বীকার করেছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ বিষয়টি বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।

গুরগাঁওয়ে ১৫ বছর ধরে বসবাসকারী দিনমজুর আথের আলি শেখ  বিবিসিকে বলেন, ‘আমার ভোটার কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র ছিল, কিন্তু তারা বলল সেগুলো জাল।’ এই অভিযানের মধ্যেই আতঙ্কে শত শত শ্রমিক রাতারাতি পালিয়ে গেছেন, ফেলে গেছেন কাজ, ঘর, এমনকি পরিবারও। আথের আলি শেখের প্রশ্ন, ‘ভাষার জন্য, ধর্মের জন্য নাকি আমি গরিব বলে আমাকে টার্গেট করা হলো? ধনী বাঙালিদের তো ধরা হলো না!’

গুরগাঁও পুলিশের দাবি, কোনো ধর্ম বা শ্রেণিকে লক্ষ্য করে অভিযান হয়নি। জনসংযোগ কর্মকর্তা সন্দীপ কুমার বলেন, ‘২৫০ জনকে আটক করা হয়েছিল, তাদের মধ্যে মাত্র ১০ জন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। তাদেরকে ফেরত পাঠানো হবে। বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কাউকে নির্যাতন করা হয়নি।’

বাংলাদেশ থেকে আসা কথিত অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ভারতের এই অভিযান নতুন নয়। ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ উন্মুক্ত সীমান্ত পেরিয়ে বহু বছর ধরেই দুই দেশের মানুষ এপারে-ওপারে যাতায়াত করছেন। তবে নরেন্দ্র মোদির সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ অভিযান আরও তীব্র হয়েছে।সম্প্রতি শত শত মানুষ, এমনকি একজন অবসরপ্রাপ্ত মুসলিম সেনা কর্মকর্তাও ‘অবৈধ অভিবাসী’ সন্দেহে গ্রেপ্তার হয়েছেন। আসামে দীর্ঘদিন ধরে এ ইস্যুতে উত্তেজনা চলছে। সেখান থেকে শত শত বাংলা ভাষাভাষী মুসলিমকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দিল্লিতেও গত ছয় মাসে প্রায় ৭০০ জনকে ধরে সীমান্তবর্তী রাজ্যে পাঠানো হয়েছে।

গৃহকর্মী রওনা বিবি বলেন, ‘বছরের পর বছর আমরা তাদের ময়লা পরিষ্কার করেছি। এখন আমাদের সঙ্গে ময়লার মতো আচরণ করা হচ্ছে।’ তার স্বামী পশ্চিমবঙ্গ থেকে ফিরেই অভিযানের খবর পেয়ে আবার পালিয়ে যান। ‘তিন দিন ধরে চিন্তায় আছি, সে ধরা পড়েছে কি না, বেঁচে আছে কি না,’ বলেন রওনা।

গৃহ মন্ত্রণালয়ের মে মাসের নির্দেশনার ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানান সন্দীপ কুমার। নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি রাজ্যে বিশেষ টাস্কফোর্স ও হোল্ডিং সেন্টার গড়ে তুলে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে আসা অবৈধ অভিবাসীদের শনাক্ত ও ফেরত পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। সন্দেহভাজনদের ৩০ দিন সময় দিয়ে তাদের কাগজপত্র নিজ জেলা থেকে যাচাই করা হবে। প্রমাণ না মিললে পুলিশি নিরাপত্তায় সীমান্তে পাঠানো হবে।

সমালোচকরা বলছেন, কাদের সন্দেহভাজন হিসেবে ধরা হবে, তার কোনো স্পষ্ট মানদণ্ড নেই। শ্রমিক অধিকার সংগঠন অল ইন্ডিয়া সেন্ট্রাল কাউন্সিল অব ট্রেড ইউনিয়নের আকাশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘সরাসরি বলতে গেলে, আপনি যদি বাংলায় কথা বলেন, মুসলিম নাম থাকে এবং বস্তিতে থাকেন, তাহলেই টার্গেট করা হচ্ছে।’

তিনি আরও জানান, যাদের পরিচয় যাচাই করে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে, তাদের হাতে কোনো প্রমাণপত্র দেওয়া হচ্ছে না। ফলে একই ব্যক্তির বারবার ঝামেলায় পড়ার ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে।

Shera Lather
Link copied!