ঢাকা শনিবার, ০৯ আগস্ট, ২০২৫

নারীর ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট গ্রহণ করে হারালেন ১২ কোটি টাকা 

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২৫, ১০:০১ এএম
ছবি- এআই দিয়ে তৈরি

ভারতের মুম্বাইয়ের ৮০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি ফেসবুকে অপরিচিত এক নারীর ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট গ্রহণ করে প্রেমের ফাঁদে পড়ে সাইবার জালিয়াতির শিকার হয়েছেন।

প্রায় দুই বছর ধরে ৭৩৪টি অনলাইন লেনদেনের মাধ্যমে চার নারী—যারা আসলে একই ব্যক্তি হতে পারেন—তার কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় ৯ কোটি রুপি, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

২০২৩ সালের এপ্রিলে বৃদ্ধ প্রথমে ‘শর্ভি’ নামে এক নারীর কাছে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠান, যা গৃহীত হয়নি। কয়েক দিন পর একই নামের অন্য একটি অ্যাকাউন্ট থেকে তিনি ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পান এবং গ্রহণ করেন। এরপর শুরু হয় চ্যাটিং, যা শিগগিরই হোয়াটসঅ্যাপে গড়ায়।

শর্ভি জানান, তিনি স্বামীর থেকে আলাদা হয়ে সন্তানদের সঙ্গে থাকেন এবং তাদের অসুস্থতার কথা বলে ধীরে ধীরে টাকা চাইতে শুরু করেন।

কিছুদিন পর ‘কবিতা’ নামে এক নারী হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করে নিজেকে শর্ভির পরিচিত হিসেবে পরিচয় দেন এবং বন্ধুত্বের প্রস্তাব দেন। পরে অশ্লীল বার্তা পাঠিয়ে বৃদ্ধকে প্রলুব্ধ করেন ও টাকা দাবি করেন।

এরপর ডিসেম্বরে ‘দিনাজ’ নামে আরেক নারী যোগাযোগ করে দাবি করেন, তিনি শর্ভির বোন। দিনাজ বৃদ্ধকে জানান, শর্ভি মারা গেছেন এবং হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে হবে। প্রমাণ হিসেবে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশট পাঠান। টাকা ফেরত চাইলে দিনাজ আত্মহত্যার হুমকি দেন।

শেষে ‘জেসমিন’ নামে আরেক নারী যোগাযোগ করে নিজেকে দিনাজের বন্ধু দাবি করে সাহায্য চান। বৃদ্ধ তাকেও টাকা পাঠান।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ৭৩৪টি লেনদেনের মাধ্যমে বৃদ্ধ ৮.৭ কোটি রুপি পাঠান। সব সঞ্চয় শেষ হওয়ার পর তিনি পুত্রবধূর কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ধার নেন এবং পরে ছেলের কাছেও ৫ লাখ টাকা চান। এতে ছেলের সন্দেহ হয়।

প্রশ্নের মুখে বৃদ্ধ সব খুলে বলেন। হতবাক হয়ে ছেলে বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন, যেখানে তার ডিমেনশিয়া ধরা পড়ে।

২০২৫ সালের ২২ জুলাই ভুক্তভোগীর পরিবার সাইবার অপরাধের অভিযোগে মামলা করে। পুলিশ ধারণা করছে, চার নারী আসলে একই ব্যক্তি ছিলেন, যিনি পরিকল্পিতভাবে বৃদ্ধকে প্রেম ও সহানুভূতির ফাঁদে ফেলে কোটি টাকার জালিয়াতি করেছেন। তদন্ত চলছে।