ঢাকা শুক্রবার, ২২ আগস্ট, ২০২৫

ভারতে অনলাইন জুয়া নিষিদ্ধে ঐতিহাসিক বিল পাস

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০২৫, ০৯:৩৪ পিএম
ছবি- সংগৃহীত

অনলাইন জুয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাস করেছে ভারতের সংসদ। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ ধরনের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম প্রতি বছর ৪৫ কোটি মানুষের কাছ থেকে প্রায় ২.৩ বিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নিচ্ছিল।

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন আইন কার্যকর হলে কার্ড গেম, পোকার এবং ফ্যান্টাসি স্পোর্টসসহ সব অনলাইন জুয়ার প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ হবে। এর মধ্যে রয়েছে ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্যান্টাসি ক্রিকেট অ্যাপগুলোও।

এই নিষেধাজ্ঞার ফলে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে ভারতের জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান স্পনসরশিপও। ড্রিম ১১ ভারতের সবচেয়ে বড় ফ্যান্টাসি স্পোর্টসের এই প্ল্যাটফর্ম ২০২৩ সালের জুলাই মাসে তিন বছরের জন্য ইন্ডিয়া দলের জার্সি স্পনসরের জন্য মনোনীত হয়েছিল। তবে, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি।

বিসিসিআই সচিব দেবজিৎ সাইকিয়া শুক্রবার বলেন, ‘যদি এটি অনুমোদিত না হয়, আমরা কিছুই করব না। বিসিসিআই দেশের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিটি নীতি মেনে চলবে।’

‘প্রমোশন অ্যান্ড রেগুলেশন অব অনলাইন গেমিং বিল’ বৃহস্পতিবার সংসদের উভয় কক্ষে পাস হয়েছে। এই আইনের অধীনে এসব গেমের প্রস্তাব, প্রচার বা অর্থায়ন করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

ড্রিম ১১ শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানায়, বিল পাস হওয়ার পর থেকে ক্যাশ গেম ও প্রতিযোগিতা বন্ধ করা হয়েছে। তবে ভক্তদের উদ্দেশে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে।

তবে আইনটি কার্যকর হতে ভারতের রাষ্ট্রপতির অনুমোদন প্রয়োজন। ফলে কিছু গেম অনলাইনে শুক্রবার পর্যন্ত চালু ছিল।

সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই আইন তৈরি করা হয়েছে আসক্তি, আর্থিক ক্ষতি এবং সামাজিক সংকট ঠেকাতে, যা ভ্রান্ত প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধনী হওয়ার প্রলোভনে মানুষকে ফাঁদে ফেলে।’

ভারতের গেমিং ইন্ডাস্ট্রি বিশ্বের অন্যতম বড় বাজার হলেও নতুন আইন ই-স্পোর্টস ও শিক্ষামূলক গেমকে আলাদা সুবিধা দিচ্ছে। সরকার বলেছে, এগুলোকে ডিজিটাল অর্থনীতির অংশ হিসেবে উৎসাহিত করা হবে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ‘নতুন আইন ই-স্পোর্টস ও সামাজিক অনলাইন গেমকে উৎসাহিত করবে এবং একই সঙ্গে সমাজকে অনলাইনে টাকার খেলার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করবে।’

কর্তৃপক্ষের দাবি, অনলাইন জুয়ার দ্রুত বিস্তার দেশে ব্যাপক আর্থিক বিপর্যয়, আসক্তি এবং এমনকি আত্মহত্যার কারণ হয়েছে। পাশাপাশি প্রতারণা, অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়নের সঙ্গেও এর যোগসূত্র পাওয়া গেছে।