ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে সম্ভাব্য হামলার পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল, এমন খবর প্রকাশের পর পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেহরান। ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি সময়মতো ব্যবস্থা না নেয়, তবে তারা নিজেদের পারমাণবিক অবকাঠামো রক্ষায় ‘বিশেষ ব্যবস্থা’ নিতে বাধ্য হবে।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে পাঠানো এক চিঠিতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, ‘ইহুদিবাদী ইসরায়েলের যেকোনো উসকানিমূলক আচরণের বিরুদ্ধে ইরান কঠোর সতর্কতা দিচ্ছে। তারা যদি হামলা চালায়, তাহলে উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।’
এদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন ও এক্সিওস জানায়, ইসরায়েল এক সপ্তাহব্যাপী সামরিক অভিযান চালানোর জন্য পুরোদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই হামলা শুধুমাত্র এক দিনের জন্য হবে না বরং তা দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক সূত্র।
তারা বলছে, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক চুক্তি আলোচনায় ব্যর্থতা দেখা দিলেই ইসরায়েল হামলা শুরু করবে।
সূত্র আরও জানায়, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আলোচনার ভেস্তে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। আলোচনায় অগ্রগতি না হলে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন পাওয়ার আশা করছেন নেতানিয়াহু।
এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসন আশঙ্কা করছে, নেতানিয়াহু হয়তো তাদের পূর্বানুমতি ছাড়াই ইরানে হামলা চালাতে পারেন।’
বর্তমানে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান পারমাণবিক আলোচনায় মতপার্থক্য স্পষ্ট। যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে, ইরান বেসামরিক উদ্দেশ্যেও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে না। তবে ইরান জানিয়েছে, চুক্তি হোক বা না হোক-তারা ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়াতে থাকবে।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানতে পেরেছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এরইমধ্যে জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে-যার মধ্যে রয়েছে উচ্চপর্যায়ের প্রশিক্ষণ ও আক্রমণ পরিকল্পনা। এই প্রস্তুতির কারণে তারা মনে করছে, ইসরায়েল যেকোনো সময় হামলা শুরু করতে পারে।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা হলে তা শুধু এই দুই দেশ নয়, পুরো মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এতে তেজস্ক্রিয়ার ঝুঁকি, মানবিক সংকট এবং আঞ্চলিক যুদ্ধের সম্ভাবনা বাড়বে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে একাধিক আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থা।