ঢাকা শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫

নতুন জাতের মিষ্টি আলু খেতে পারবেন ডায়াবেটিস রোগীরাও 

বাকৃবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ২৩, ২০২৫, ০৩:১৫ পিএম
নতুন উদ্ভাবিত তিন জাতের মিষ্টি আলু। ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) অধিক পুষ্টি ও ঔষধি গুণসম্পন্ন এবং উচ্চ ফলনশীল রঙিন মিষ্টি আলুর তিনটি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছে। কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক এবিএম আরিফ হাসান খানের নেতৃত্বে একদল গবেষক এ জাত উদ্ভাবন করেন। 

ইন্টারন্যাশনাল পটেটো সেন্টারের (সিআইপি) অর্থায়নে ওই গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে।

অধ্যাপক এবিএম আরিফ হাসান খান বলেন, আমাদের উদ্ভাবিত নতুন জাতের মিষ্টি আলুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ভাতের চেয়ে কম। ফলে ডায়াবেটিস রোগীরা এই আলু অনায়াসে খেতে পারবেন। যেহেতু আলুগুলো রঙিন জাতের তাই এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্থোসায়ানিন, কেরাটিন, ফাইবার এবং খনিজ পদার্থ। এই আলু নিয়মিত খেলে তা ক্যানসার,ডায়াবেটিস, কোষ্ঠকাঠিন্যসহ নানান ধরনের জটিল রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশাবাদী। 

নতুন উদ্ভাবিত জাত সম্পর্কে অধ্যাপক আরিফ বলেন, আমাদের গবেষণায় তিনটি উচ্চফলনশীল মিষ্টি আলুর জাত উদ্ভাবন করতে পেরেছি। নতুন উদ্ভাবিত আলুর জাতসমূহের নাম হলো- ‘বাউ মিষ্টি আলু- ৭, ৮ ও ৯’।

গবেষণার প্রধান গবেষক বলেন, বর্তমানে দেশে প্রায় ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলুর চাষ হচ্ছে, যার থেকে আড়াই লাখ টনের কিছু বেশি উৎপাদন হয়। অর্থাৎ প্রতি হেক্টরে গড় ফলন ১০ টনের সামান্য বেশি। তবে দেশে মিষ্টি আলুর চাহিদা উৎপাদনের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। মূলত মিষ্টি আলুর উৎপাদন বাড়ানো এবং পুষ্টি চাহিদা পূরণই আমাদের এই গবেষণাটির মূল উদ্দেশ্য।

গবেষণার পদ্ধতি সম্পর্কে ওই অধ্যাপক আরও জানান, পেরুর রাজধানী লিমায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল পটেটো সেন্টারের সদর দপ্তর থেকে বীজ এনে পলিক্রস ব্রিডিংয়ের মাধ্যমে চারা উৎপাদন করা হয়। এরপর সাড়ে চার বছরের গবেষণায় মিষ্টি আলুর রঙিন তিনটি জাত উদ্ভাবন করা হয়। এসব আলু দেখতে বেগুনি,কমলা ও গোলাপি রঙের। 

নতুন উদ্ভাবিত মিষ্টি আলুর চাষাবাদ পদ্ধতি ও ফলন সম্পর্কে অধ্যাপক আরিফ বলেন, নতুন উদ্ভাবিত জাত তিনটি সাধারণ মিষ্টি আলুর চেয়ে তিনগুণ বেশি ফলনশীল। এ জাতের আলু সারা বছর চাষযোগ্য। মাত্র ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে ফসল ঘরে তোলা যায়। এর চাষাবাদ পদ্ধতিও খুবই সহজ, ফলনও ভালো। এই আলু চাষে কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন তেমনি দেশের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে ইহা সহায়ক হবে। নতুন জাতের এই আলুগুলো কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মাধ্যমে সারা দেশে দ্রুত ছড়িয়ে দেওয়ার তাগিদে এরইমধ্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।