গাজাবাসীদের ওপর আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়াসুস।কান্নাজড়িত কণ্ঠে ইসরায়েলকে ফিলিস্তিনের প্রতি ‘করুণা’ দেখানোর আহ্বান জানান তিনি।
তুর্কি সংবাদমাধ্যমে ইসরায়েলকে ‘ক্ষুধা’কে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করতেও আহ্বান জানান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান। নিজ স্বার্থেই ইসরায়েলের শান্তি প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।
সম্প্রতি ইসরায়েল পুনরায় হামলা জোরদার করে। এর জেরে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা প্রায় ৫৪ হাজার ছাড়িয়েছে। নতুন রণকৌশল হিসেবে মানবিক সহায়তার ট্রাক পার হতে না দেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে ইসরায়েল। ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে গাজার পূর্ণ দখল নিতে চান বলেও জানান নেতানিয়াহু।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বার্ষিক সম্মেলনে আবেগঘন বক্তব্যে গেব্রিয়াসুস বলেছেন, ‘গণহত্যা-যুদ্ধ ইসরায়েলকেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং এখান থেকে স্থায়ী সমাধান আসবে না।’
ইথিওপিয়ায় নিজের যুদ্ধকালীন স্মৃতির কথা স্মরণ করে তিনি আরও বলেছেন, ‘আমি অনুভব করতে পারছি যে, গাজার মানুষ এই মুহূর্তে কেমন আছেন। আমি এর গন্ধ পাচ্ছি। আমি কল্পনা করতে পারছি। এমনকি শব্দও শুনতে পাচ্ছি। এটি পিএসটিডির (পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার) কারণে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেছেন, ‘গাজায় মানুষ কতটা কষ্ট পাচ্ছে, তা আপনারা কল্পনা করতে পারছেন। খাবারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা সত্যিই ভুল। চিকিৎসা সরবরাহকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা ঠিক নয়।’
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ প্রায় ৯০ ট্রাক ত্রাণ বিতরণ শুরু করেছে, যা ২ মার্চ ইসরায়েলের সর্বাত্মক অবরোধ আরোপের পর গাজায় প্রথম সরবরাহ। তবে কেবল রাজনৈতিক সমাধানই অর্থবহ শান্তি বয়ে আনতে পারে বলে মনে করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান আধানম গেব্রিয়াসুস।
তেদরোস বলেন, ‘শুধু একটি রাজনৈতিক সমাধানই প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে। ইসরাইলের নিজেদের স্বার্থেই শান্তি প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। আমি মনে করি, এ যুদ্ধ ইসরাইলকেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং এটি কোনো স্থায়ী সমাধান আনবে না। আমি আপনাদের কাছে দয়া দেখানোর অনুরোধ জানাচ্ছি। এটি আপনাদের জন্যও ভালো, ফিলিস্তিনিদের জন্যও ভালো, মানবতার জন্যও ভালো।’
জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার ৩৬টি হাসপাতালের মধ্যে বর্তমানে চালু আছে ১৯টি। এসব হাসপাতালের কর্মীরা ‘অসম্ভব কঠিন পরিবেশে’ কাজ করছেন।
সেখানকার প্রায় ৯৪ শতাংশ হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। উত্তর গাজার বাসিন্দারা প্রায় সব ধরনের স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছেন।