ভারতের পরিবেশগত ভবিষ্যৎ নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালত এক কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছে। হিমাচল প্রদেশে লাগামহীন উন্নয়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা ও বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চ শুনানিতে মন্তব্য করেন, এই ধারা চলতে থাকলে ‘ভারতের মানচিত্র থেকেই হিমাচল প্রদেশ মুছে যেতে পারে’।
এই পর্যবেক্ষণ আসে একটি মামলায়, যেখানে হিমাচল হাইকোর্ট ‘সবুজ অঞ্চল’ ঘোষণার আবেদন নাকচ করেছিল। সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায়ে হস্তক্ষেপ না করলেও রাজ্য ও কেন্দ্রকে কড়া ভাষায় সতর্ক করে জানিয়েছে, ‘রাজস্ব আদায়ের প্রয়োজন থাকতে পারে, কিন্তু তা কখনোই প্রকৃতি ও পরিবেশের বিনিময়ে হতে পারে না।’
আদালত স্পষ্ট করে বলেছে, পর্যটন, চার লেনের সড়ক, টানেল, রোপওয়ে এবং জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নামে পাহাড়ে যে লাগাতার নির্মাণ চলছে, তা ভয়াবহ পরিবেশগত বিপর্যয়ের জন্ম দিচ্ছে। একের পর এক ভূমিধস, ঘরবাড়ি ধ্বংস ও পাহাড় ধসে পড়ার পেছনে প্রকৃতির ওপর এই অতিরিক্ত চাপই দায়ী।
বিচারপতিরা মন্তব্য করেন, ‘শুধু প্রকৃতিকে দোষারোপ করে লাভ নেই, দায় নিতে হবে আমাদেরও। প্রকৃতির প্রতিশোধ খুবই ভয়ংকর।’ লাগামহীন পর্যটন বিস্তারকেও এই সংকটের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ, হিমালয়-সংলগ্ন সব রাজ্যকে পরিবেশ ও ভূগোলের বাস্তবতা বিবেচনা করে সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। আদালতের নির্দেশ, এ বিষয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা (পিআইএল) রেজিস্ট্রি করতে হবে এবং হিমাচল সরকারকে ২৫ আগস্টের মধ্যে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানাতে হবে।
শীর্ষ আদালতের হুঁশিয়ারি, ‘এখনই সাবধান না হলে শুধু হিমাচল নয়, গোটা দেশকেই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হবে। পরিবেশকে উপেক্ষা করে কোনো উন্নয়ন টেকসই নয়।’
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি।