ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলায় জোরপূর্বক এক বৃদ্ধের চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় নতুন মোড় নিয়েছে। প্রায় তিন মাস আগে সংঘটিত এই ঘটনার ভিডিও সম্প্রতি সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হলে তা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। ঘটনার শিকার ৭০ বছর বয়সি হালিম উদ্দিন আকন্দের পরিবারের পক্ষ থেকে অবশেষে তারাকান্দা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ভুক্তভোগীর ছেলে শহীদ আকন্দ শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) তারাকান্দা থানায় মামলা করেন। মামলায় সাতজনকে নাম উল্লেখ করে এবং চার থেকে পাঁচজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। মামলায় ঘটনার তারিখ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে চলতি বছরের ৫ জুন।
তারাকান্দা থানার ওসি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ‘ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন পাওয়ার পর মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে আসামিদের নাম-পরিচয় আপাতত প্রকাশ করা হচ্ছে না।’
কাশিগঞ্জ বাজার-সংলগ্ন কোদালিয়া গ্রামের বাসিন্দা হালিম উদ্দিন আকন্দ অভিযোগ করেন, ঘটনার দিন স্থানীয় কয়েকজন তাকে চা-নাশতা খাওয়ার জন্য জোরাজুরি করেন। তিনি রাজি না হওয়ায় তাকে জোরপূর্বক বাইরে নিয়ে গিয়ে চুল কেটে দেওয়া হয়। এই অপমানজনক ঘটনার কারণে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন এবং সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হয়েছেন বলেও জানান।
এ ঘটনার প্রতি তীব্র উদ্বেগ জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, ‘একজন ব্যক্তির চুল জোর করে কেটে দেওয়া তার শারীরিক অখণ্ডতা, ব্যক্তিস্বাধীনতা এবং মৌলিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এমন ঘটনার জন্য দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি।’
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘একজন বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিকের সঙ্গে এমন আচরণ অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং বেআইনি। এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে পুলিশ কাজ করছে। তদন্ত সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করে অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।’
বৃদ্ধের ছেলে শহীদ আকন্দ বলেন, ‘আমার বাবার সঙ্গে যেভাবে অসভ্য আচরণ করা হয়েছে, তা কোনো সভ্য সমাজে কল্পনাও করা যায় না। যারা এই ঘৃণিত কাজ করেছে, তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’