ইসরায়েলের রাজধানী তেলআবিবের প্রধান বিমানবন্দর বেন-গুরিয়নে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। হুতি নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনের ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স ফ্লাইট বন্ধ রয়েছে।
শনিবার (৭ জুন) ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কারণে বেন-গুরিয়ন বিমানবন্দরের কার্যক্রম এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আশঙ্কায় প্রধান প্রধান আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স তেলআবিবগামী রুট এড়িয়ে চলেছে।
ইয়েমেনের আল-মাসিরাহ টেলিভিশনের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইসরায়েলের একটি প্রভাবশালী অর্থনৈতিক দৈনিক স্বীকার করেছে যে, দেশটির বিমান পরিবহন খাত বর্তমানে চরম সংকটে রয়েছে। সীমিত পরিসরে কিছু ফ্লাইট চালু হলেও অধিকাংশ এয়ারলাইন্স নিরাপত্তার অজুহাতে ফিরতে চাচ্ছে না। অনেক এয়ারলাইন্স তাদের ফ্লাইট চালুর সময়সীমা অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে দিয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গ্রীষ্মকালীন যাত্রীচাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এবং সরবরাহ সংকটে বিমান টিকিটের দামও অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে।
এদিকে, গাজা উপত্যকায় ঈদের আগের দিন এবং পরের দিন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। গাজায় ঈদুল আজহা উদযাপিত হয় ৬ জুন। এর পরদিন ৭ জুন ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর হামলায় অন্তত ৭৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় ১০০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার সিভিল ডিফেন্স বিভাগ।
আহত ও নিহতদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছেন। নিহতদের মধ্যে গাজা সিটির সাবরা এলাকার একটি পরিবারের ১৬ জন সদস্য রয়েছেন, যাদের মধ্যে ৬ জনই শিশু।
এর আগের দিন, ঈদের দিনেও ইসরায়েলি বাহিনী গাজার বিভিন্ন এলাকায় গোলাবর্ষণ চালায়। এতে প্রাণ হারান আরও অন্তত ৪২ জন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২০ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনে এ পর্যন্ত অন্তত ৫৪ হাজার ৮০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ২৫ হাজার ৬৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। তবে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস দাবি করেছে, মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে। বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকেই ইয়েমেনি হুতি বাহিনী ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে থাকার ঘোষণা দেয় এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একাধিকবার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। হুথি নেতারা এই হামলাকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতির অংশ হিসেবে উল্লেখ করছেন।