শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২৫, ০৯:৫৩ পিএম

ইরানের পাশে দাঁড়াল যেসব মুসলিম রাষ্ট্র

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২৫, ০৯:৫৩ পিএম

প্রতীকি ছবি

প্রতীকি ছবি

ইসরায়েলের ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে চালানো আকস্মিক হামলার পর ইরানের পক্ষে প্রকাশ্য অবস্থান নিয়েছে মুসলিম বিশ্বের একাধিক প্রভাবশালী দেশ। ১৩ জুন এই হামলার পর বিভিন্ন মুসলিম দেশ এই হামলাকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন ও ইরানের সার্বভৌমত্বে আঘাত বলে আখ্যা দেয়।

সৌদি আরব হামলাকে ইরানের সার্বভৌমত্ব ও আন্তর্জাতিক আইন-নীতিমালার ‘সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে উল্লেখ করে জানায়, এই ধরনের পদক্ষেপ গোটা অঞ্চলের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। সংযমের আহ্বান জানিয়ে দেশটি আঞ্চলিক উত্তেজনা না বাড়ানোর অনুরোধ জানায়।

সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ‘সৌদি আরব ভ্রাতৃপ্রতিম ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের বিরুদ্ধে স্পষ্টতই ইসরাইলি আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে, যা এর সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তাকে ক্ষুণ্ন করে।’ 

জর্ডান মন্তব্য করে, এটি ‘বিপজ্জনক মাত্রার উত্তেজনা’ এবং আন্তর্জাতিক আইন ও ইরানের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন। এই বিষয়ে দেশটি আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ কামনা করছে।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সুফিয়ান কুদাহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ইসরায়েলের গাজা, পশ্চিম তীর ও লেবাননে চলমান আগ্রাসন অবিলম্বে বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে আঞ্চলিক উত্তেজনা প্রশমনের পথে প্রথম পদক্ষেপ নেওয়া হোক এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের দায়িত্ব পালন করুক।’

ওমান একে ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি আগ্রাসন ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করে। তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবিলম্বে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানায়।

ইসরায়েলের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়া। দেশটি শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে বিরোধ নিষ্পত্তির ওপর জোর দিয়েছে। একই সঙ্গে এই হামলা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে বিপন্ন করতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। 

কাতার হামলাকে স্পষ্টভাবে ইরানের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করে। তারা রাজনৈতিক সংলাপ ও সংযমের আহ্বান জানায়।

কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল থানি বলেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে যে কোনো আক্রমণের ফলে সমগ্র অঞ্চলের জন্য বিপর্যয়কর পরিণতি হবে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ইরানের ওপর চালানো সামরিক আঘাতের কড়া নিন্দা জানায় এবং এটিকে গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে।

তুরস্ক ইসরায়েলের হামলাকে ‘সন্ত্রাস’ হিসেবে অভিহিত করে এবং বলে এই হামলা গোটা অঞ্চলকে বড় যুদ্ধে ঠেলে দিতে পারে।

পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলে, এই হামলা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে বিঘ্নিত করে এবং জাতিসংঘের উচিত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।

মিশর জানায়, তারা এই ঘটনার জন্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং যেকোনো পদক্ষেপ যা আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে তা তারা নিন্দা করে।

বাহরাইন এই সামরিক অভিযানে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করে সকল পক্ষকে সংযমের অনুরোধ জানিয়েছে।

সিরিয়া সরাসরি ইরানের পাশে দাঁড়িয়ে ‘সম্পূর্ণ সংহতি’ প্রকাশ করে এবং বলে, ‘ইরানের নিজ ভূখণ্ড রক্ষা করার অধিকার রয়েছে।’

ইরাক এই অতর্কিত হামলাকে তীব্রভাবে নিন্দা জানিয়ে বলে, ইসরায়েল এই হামলার মাধ্যমে অঞ্চলজুড়ে সংঘাত আরও বাড়িয়ে তুলছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা এতে নেতিবাচক ভূমিকা রাখছে।

কুয়েত এই আগ্রাসনকে ‘অরাজক নীতি’ হিসেবে উল্লেখ করে এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে দ্রুত হস্তক্ষেপের আহ্বান জানায়।

মালয়েশিয়া বলে, ইসরায়েলের এই হামলা আন্তর্জাতিক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন এবং এটি গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তাকে দুর্বল করে। দেশটি অবিলম্বে হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।

এই একসঙ্গে বহু মুসলিম দেশের অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে। একদিকে যেমন ইরান কূটনৈতিকভাবে আরও শক্ত অবস্থানে এসেছে, অন্যদিকে গোটা অঞ্চলে নতুন করে সংঘাতের ছায়া নেমে এসেছে।

উল্লেখ্য, মধ্যপ্রাচ্যের দুটি শক্তিশালী প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস ও হিজবুল্লাহ তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ইরানের সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা এই দুই সংগঠনই হামলার পরপরই একে সরাসরি ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ বলে অভিহিত করে এবং প্রতিশোধের হুমকি দেয়।

ইসরায়েলের হামলার পর হামাস এক বিবৃতিতে জানায়, ‘এই আগ্রাসন পুরো অঞ্চলে সংঘাত উসকে দিতে পারে এবং ইরানের ওপর হামলার মাধ্যমে আসলে প্রতিরোধ অক্ষকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে ইসরায়েল।’

হামাসের সশস্ত্র শাখা ‘আল কাসসাম ব্রিগেডস’-এর মুখপাত্র আবু উবায়দা বলেন, ‘জায়ানবাদী শত্রু যদি মনে করে যে এমন বিশ্বাসঘাতক হামলা আমাদের প্রতিরোধ দুর্বল করতে পারে, তবে তারা মারাত্মক ভুল করছে। ইরানের পাশে আমরা আছি এবং প্রতিশোধ আসবেই।’

তিনি আরও বলেন, এই হামলা শুধু ইরানের বিরুদ্ধে নয়, গোটা প্রতিরোধ ফ্রন্টের বিরুদ্ধে। হামাস এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ইসরায়েলকে এর পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলে।

লেবাননভিত্তিক প্রতিরোধ গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ এই হামলাকে সরাসরি ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। সংগঠনটির উপ-মহাসচিব নেওয়াম কাসেম বলেন, ‘এই আক্রমণ একটি বিপজ্জনক ও অপরাধমূলক আগ্রাসন। এর মূল প্ররোচক যুক্তরাষ্ট্র, আর বাস্তবায়নকারী ইসরায়েল। প্রতিটি আগ্রাসনের জবাব আসবে।’

হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, ‘ইরান একা নয়। প্রতিরোধ অক্ষের অংশ হিসেবে হিজবুল্লাহ ইরানের সঙ্গে রয়েছে এবং প্রয়োজনে সামরিক জবাব দিতেও তারা প্রস্তুত।’

উল্লেখ্য, হামলার দিন থেকেই লেবাননের দক্ষিণ সীমান্তে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা ও গোলাগুলির খবর মিলেছে। অনেকেই এটিকে ইরানের পক্ষে হিজবুল্লাহর ‘প্রাথমিক সাড়া’ বলে ব্যাখ্যা করছেন। 

পাশাপাশি হামাস গাজা থেকেও তাদের বাহিনীকে ‘প্রস্তুত থাকার’ নির্দেশ দিয়েছে বলে আন্তর্জাতিক কিছু গণমাধ্যম জানায়।

সূত্র: রয়টার্স, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, দ্য গার্ডিয়ান, দ্য ডেইলি স্টার, অবজারভারবিডি, দ্য হিন্দু, টাইমস অব ইসরায়েল, আলজাজিরা, ঢাকা ট্রিবিউন, তেহরান টাইমস, আনাদোলু এজেন্সি, টাইমস অব ইন্ডিয়া, দ্য নিউ রিজিয়ন, রেডিট, দ্য অস্ট্রেলিয়ান, উইকিপিডিয়া।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!