ইসরায়েলি হামলা চলাকালে কোনো ধরনের যুদ্ধবিরতির আলোচনায় আগ্রহী নয় ইরান। তখনই সত্যিকারের যুদ্ধবিরতির আলোচনা করব, যখন ইসরায়েলের প্রথম হামলার পূর্ণ প্রতিশোধ নেব বলে জানিয়েছে ইরান।
রোববার (১৫ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম রয়টার্স।
নাম গোপন রাখার শর্তে রয়টার্সকে এক কর্মকর্তা বলেন, ইরানিরা কাতার এবং ওমানকে জানিয়েছে, ইরান তখনই সত্যিকারের যুদ্ধবিরতির আলোচনা করবে যখন ইসরায়েলের প্রথম হামলার পূর্ণ প্রতিশোধ তারা নেবে।
এর আগে, ইসরায়েলি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছিল, ইরান যুদ্ধবিরতির জন্য ওমান ও কাতারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। কিন্তু এ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
এদিকে, রোববার (১৫ জুন) তেহরানে ইসরায়েলের হামলায় ইরানের ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড (আইআরজিসি)–এর গোয়েন্দা প্রধানসহ তিনজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
ইরানি সংবাদ সংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি ও তার সহকারী হাসান মোহাকিক সরাসরি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হন। একই হামলায় আরও একজন জ্যেষ্ঠ জেনারেল মোহসেন বাঘারি নিহত হয়েছেন বলে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম নিশ্চিত করেছে।
নেতানিয়াহুর স্বীকারোক্তি, ‘আমরাই হত্যা করেছি’। ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এ ঘটনার দায় স্বীকার করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করছি, আমরা তেহরানে তাদের প্রধান গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও তার সহকারীকে হত্যা করেছি।’
এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ইসরায়েল প্রথমবারের মতো সরাসরি ইরানের রাজধানীতে সামরিক হামলার কথা স্বীকার করে। এতে মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত আরও জটিল আকার ধারণ করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
এর আগে গত শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে ইরানে আকস্মিক হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান, বিপ্লবী গার্ডের শীর্ষ কর্মকর্তা ও বিমানবাহিনী প্রধানসহ অন্তত ছয়জন জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন।
রোববারের হত্যাকাণ্ড সেই আগ্রাসনেরই দ্বিতীয় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, তেহরানে সরাসরি সামরিক কর্মকর্তাদের হত্যার মাধ্যমে ইসরায়েল ইরানের কেন্দ্রস্থলে যুদ্ধ জারি করেছে, যা পুরো মধ্যপ্রাচ্যে একটি বিস্তৃত যুদ্ধের ইঙ্গিত দিতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ এখন আর সীমান্তবর্তী সংঘাত নয়- এটি সরাসরি রাজধানীগুলোর কেন্দ্রবিন্দুতে গড়িয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :