ঢাকা সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে দিনে কার খরচ কত? 

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২৫, ০১:৩২ পিএম
প্রতীকী ছবি- ইরান-ইসরায়েল সংঘাত।

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলায় এখন পর্যন্ত দুই দেশের প্রায় ২৫০ জন নিহত হয়েছেন।  সরকারি তথ্য প্রাপ্তির সীমাবদ্ধতা, সংঘাতের তীব্রতার পরিবর্তন এবং পরোক্ষ অর্থনৈতিক প্রভাব মিলিয়ে এ হামলার দৈনিক ব্যয় অনুমান করা অত্যন্ত একটি জটিল প্রক্রিয়া।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইসরায়েলি পত্রিকা ইয়েদিওথ আহরোনোথে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের খরচ ৪২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা প্রতিদিন গড়ে ৮ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। 

পত্রিকাটি জানায়, গত বছর ১ অক্টোবর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জোটের সহায়তায় ইসরায়েলের আকাশসীমা রক্ষা করতে এক রাতে ২৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার খরচ হয়েছে।

ইয়েদিওথ আহরোনোথ আরও জানায়, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাজেটের সবচেয়ে বড় ব্যয়ের খাত হলো রিজার্ভ সেনাবাহিনীর অর্থায়ন, এটি ১২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

ইসরায়েলের যুদ্ধ ব্যয়

ইসরায়েলের একজন সাবেক জ্যেষ্ঠ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা অনুমান করে একটি সংবাদমাধ্যমকে জানায়, ইসরায়েলের প্রত্যক্ষ সামরিক ব্যয় প্রতিদিন প্রায় ৭২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এর মধ্যে অর্ধেক আক্রমণাত্মক অভিযান (যেমন বিমান হামলা, যুদ্ধাস্ত্র) এবং বাকি অর্ধেক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার (যেমন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহতকরণ, রিজার্ভ মোতায়েন) পেছনে খরচ হয়। 

তিনি বলেন, ২০২৪ সালের অক্টোবরে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে এক রাতের প্রতিরক্ষা বাবদ ইসরায়েলের ২৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার খরচ হয়েছিল। আর ২০২৪ সালের এপ্রিলে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে তাদের ব্যয় হয়েছিল ১ দশমিক ০৮ থেকে ১ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার।

এ ছাড়া, গাজা ও লেবাননের বৃহত্তর সংঘাতের জন্য ইসরায়েলের দৈনিক প্রায় ১৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার খরচ হয়েছে। এতে অনুমান করা যায়, তীব্র উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে ইরানের আক্রমণ প্রতিহত করতে ইসরায়েলের কত খরচ হতে পারে!

ইরানের যুদ্ধ ব্যয়

ইরানের যুদ্ধ ব্যয় যাচাই করা কঠিন। কারণ ইরান বিস্তারিত সামরিক বাজেট প্রকাশ করে না। তবে সক্রিয় সংঘর্ষের সময়  ইরানের দৈনিক সামরিক ব্যয় ৪৬ কোটি থেকে ৬৫ কোটি ডলার পর্যন্ত হতে পারে বলে অনুমান করা হয়। এই পরিসংখ্যান সম্ভবত ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ (যেমন ১১০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য ৩ কোটি থেকে ৫ কোটি ডলার খরচ) এবং অন্যান্য সামরিক ব্যয় অন্তর্ভুক্ত।

ইরানের ব্যয় সাধারণত ইসরায়েলের তুলনায় কম হয়। কারণ তাদের অস্ত্রশস্ত্র তুলনামূলক সস্তা। ইসরায়েলের একটি অ্যারো ক্ষেপণাস্ত্রের দাম ৩৫ লাখ ডলার। এটি সরবরাহ করে যুক্তরাষ্ট্র। সে তুলনায় একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের দাম প্রায় ১ লাখ ডলার।

উল্লেখ্য, এই পরিসংখ্যানগুলো আনুমানিক। কারণ সংঘাতের পর্যায় অনুসারে (যেমন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বনাম কম তীব্রতার অভিযান) ব্যয় ভিন্ন হয়। অর্থনৈতিক মন্দা, পর্যটন খাতের ক্ষতি বা অবকাঠামো ক্ষতির মতো পরোক্ষ ব্যয়গুলো প্রতিদিনের ভিত্তিতে পরিমাপ করা অত্যন্ত কঠিন। ইসরায়েলের জন্য, ২০২৩-২০২৫ সালের মোট যুদ্ধব্যয় (গাজা ও লেবাননসহ) ৬৭ বিলিয়ন ডলার অনুমান করা হয়। এর বিপরীতে ইরানের বৃহত্তর অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী উচ্চ-ব্যয়ের যুদ্ধে টিকে থাকার সক্ষমতাকে সীমিত করে।