সৌদি আরবের মক্কায় ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন করায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন এক মিসরীয় হজযাত্রী। গাজায় ‘ইসরায়েলি’ অবরোধ ও ক্ষুধার অবসানের দাবিতে পবিত্র কাবার পাশে ফিলিস্তিনের পতাকা তুলেন ওই হজযাত্রী। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম মিডল ইস্ট আই এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গ্রেপ্তারের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ওই ব্যক্তি কেঁদে কেঁদে বলছেন, ‘ও ইসলাম!’ ‘গাজার শিশুরা মারা যাচ্ছে। হে মুসলমানরা!’ এরপরই সৌদি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়ে তাকে আটক করেন।
এ ঘটনার পর ইসলামের পবিত্র স্থানগুলোতে সৌদি সরকারের রাজনৈতিক অভিব্যক্তির ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সৌদি কর্তৃপক্ষের দাবি, হজ ও ওমরাহর সময় কোনো ধরনের স্লোগান, পতাকা বা রাজনৈতিক প্রতীক নিষিদ্ধ রাখা হয়, যাতে ইবাদতের পবিত্রতা বজায় থাকে।
তবে সমালোচকেরা বলছেন, এই নীতির আড়ালে সৌদি সরকার মূলত ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতির প্রকাশ দমন করছে এবং মুসলিম সংহতির কণ্ঠরোধ করছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, সৌদি আরবে এখন যেন ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানানোই অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর আগেও ফিলিস্তিনের পতাকার রঙের তজবিহ ও একটি সাদা কেফিয়েহ পরার কারণে ২০২৩ সালে একজন ব্রিটিশ হজযাত্রীকে আটক করা হয়।
বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার দাবি, ২০১৭ সালে মোহাম্মদ বিন সালমান সৌদি ক্রাউন প্রিন্স হওয়ার পর থেকে রাজতন্ত্রের সমালোচনা কিংবা সৌদি পররাষ্ট্রনীতির বিরোধিতা করা যেকোনো শান্তিপূর্ণ বক্তব্যের জন্য বহু নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মক্কার বাইরেও সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ অনলাইনে ইসরায়েলের সমালোচনা কিংবা গাজার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করায় দেশটির নাগরিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানা গেছে।