গাজা ও কাতারে সাম্প্রতিক ইসরায়েলি পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামি সামরিক জোট গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানি। রোববার সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো মুসলিম দেশগুলোর যৌথ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট করেছে। বার্তা সংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
শিয়া আল-সুদানি উল্লেখ করেন, গত মঙ্গলবার দোহায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় পাঁচ হামাস সদস্য ও এক কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হন। তিনি ঘটনাটিকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ইসরায়েলের পদক্ষেপ পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মুসলিম দেশগুলো নিজেদের রক্ষার জন্য যৌথ নিরাপত্তা বাহিনী গঠন করতে পারবে না—এর কোনো কারণ নেই।’ আরব ও ইসলামি দেশগুলোকে রাজনৈতিক, নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
রোববার দোহায় আরব ও ইসলামি পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৈঠক করেছেন, যেখানে সোমবারের জরুরি শীর্ষ সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। এই সম্মেলনে প্রায় এক দশক আগে মিসরের প্রস্তাব করা যৌথ আরব সামরিক বাহিনী সক্রিয় করার বিষয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইরাকি প্রধানমন্ত্রী সতর্ক করেন, কাতারে ইসরায়েলের আগ্রাসন থেমে থাকবে না এবং প্রায় দুই বছর ধরে গাজায় যে কৌশলগত হত্যাকাণ্ড চলছে তা এ হুমকির প্রমাণ। তিনি আরও জানান, ইসলামি বিশ্ব ইসরায়েলকে প্রতিহত করার মতো ‘বহু কৌশলগত উপায়’ হাতে রেখেছে।
মঙ্গলবার দোহায় ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্য ছিল একটি আবাসিক কমপ্লেক্স, যেখানে হামাস নেতারা গাজা যুদ্ধের অবসানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করছিলেন। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই সংঘাতে গাজায় এখন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
কাতার এ হামলাকে ‘কাপুরুষোচিত’ ও আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে নিন্দা জানিয়েছে এবং ইসরায়েলের ‘বেপরোয়া আচরণ’ সহ্য করা হবে না বলে সতর্ক করেছে। গাজায় যুদ্ধের অবসানে মধ্যস্থতা প্রচেষ্টায় কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিসর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।