সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলায় গাজা উপত্যকায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬০ ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও ১৪২ জন। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে হামলায় নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। কারণ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ধ্বংসস্তূপের তলায় অনেকের মরদেহ চাপা পড়েছে এবং প্রয়োজনীয় লোকবল ও সরঞ্জামের অভাবে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, শুক্রবার সন্ধ্যার পর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গত দুই বছরের অভিযানে মোট নিহতের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৪৯ এবং আহতের সংখ্যা ১ লাখ ৬৭ হাজার ৫১৮ জনে পৌঁছেছে। এ ছাড়া গত ২৭ মে থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় খাদ্য ও ত্রাণ নিতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপরও নিয়মিত হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। শুক্রবার ত্রাণ নিতে গিয়ে ৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৩৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।
হামাসের হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের মুক্ত করতে ওইদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনো চলছে। আন্তর্জাতিক জনমতকে উপেক্ষা করে গাজায় নিষ্ঠুর সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখার জন্য গত নভেম্বরে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং ইসরায়েলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে নেদারল্যান্ডসের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। এ ছাড়া জাতিসংঘের আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
তবে কোনোকিছুই দমাতে পারছে না ইসরায়েলকে। শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে হামাসকে সম্পূর্ণ উচ্ছেদ না করা পর্যন্ত গাজায় সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তার ভাষণের সময় পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ সম্মেলনস্থল ত্যাগ করে গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ জানায় ।
