ঢাকা বুধবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৫

রাশিয়া সফরে বাশার আল-আসাদকে ফেরত চাইবেন আল-শারা

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০২৫, ০৬:৩৪ পিএম
রাশিয়া সফরে মস্কো পৌঁছেছেন আহমেদ আল-শারা। ছবি- সংগৃহীত

ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথম সরকারি সফরে মস্কোতে পৌঁছেছেন সিরিয়ার অন্তর্বতীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা। রাশিয়ায় বর্তমানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ অবস্থান করছেন। আসাদকে দেশে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখি করতে ক্রেমলিনের কাছে অনুরোধ তিনি করবেন বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা আনাদোলু।

সিরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা সানা জানিয়েছে, সফরকালে প্রেসিডেন্ট শারা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। আলোচনায় দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে। সফরের কর্মসূচিতে রাশিয়ায় বসবাসরত সিরিয়ান প্রবাসীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

একজন সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সফর চলাকালে প্রেসিডেন্ট শারা রাশিয়ার কাছে সাবেক প্রেসিডেন্ট আসাদকে হস্তান্তরের অনুরোধ জানাবেন।

ক্রেমলিনের বিবৃতিতেও জানানো হয়েছে, আল-শারা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। আলোচনায় বাণিজ্য, অর্থনীতি ও মানবিক সহযোগিতা জোরদার করা এবং মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় হবে। রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য সিরিয়ার নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে কার্যকর সম্পর্ক স্থাপন এবং সেখানে রুশ সামরিক উপস্থিতি নিশ্চিত করা।

আসাদ একসময় রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন। এক দশক আগে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ চলাকালে তার পক্ষে মস্কোর হস্তক্ষেপ যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দেয় এবং তাকে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সিরিয়ায় রাশিয়ার মনোযোগ কমে গেলে গত ডিসেম্বরে বিদ্রোহীদের আকস্মিক অভিযানে আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়। এরপর রাশিয়া তাকে আশ্রয় দেয়।

সানা জানিয়েছে, আল-শারা ও পুতিন ‘পারস্পরিক স্বার্থের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করবেন এবং উভয় দেশের সাধারণ স্বার্থ রক্ষায় সহযোগিতা বৃদ্ধির পথ খুঁজবেন’।

সম্প্রতি সিবিএস নিউজের ‘৬০ মিনিটস’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আল-শারা বলেন, বর্তমান কর্তৃপক্ষ বাশার আল-আসাদের বিচারের দাবিতে ‘সব আইনি উপায়’ ব্যবহার করবে।

অন্যদিকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, মস্কো আসাদকে মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়েছে। কারণ ‘তিনি ও তার পরিবার শারীরিকভাবে নির্মূল হওয়ার ঝুঁকিতে ছিলেন’। আসাদের ওপর বিষ প্রয়োগের গুজব সম্পর্কে ল্যাভরভ বলেন, ‘এমন কিছু ঘটেনি, তিনি মস্কোতে সুস্থ আছেন’।

যুদ্ধক্ষেত্রে একসময় বিপরীত অবস্থানে থাকলেও দামেস্কের নতুন নেতৃত্ব রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাস্তববাদী নীতি অনুসরণ করছে। রাশিয়া এখনো সিরিয়ার উপকূলে তাদের বিমান ও নৌঘাঁটি বজায় রেখেছে। এই ঘাঁটিগুলো রাখার বিষয়ে ক্রেমলিন নতুন চুক্তি করতেও আগ্রহী। মস্কো সিরিয়ায় তেল সরবরাহও অব্যাহত রেখেছে বলে জানা গেছে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে একটি রুশ প্রতিনিধি দল দামেস্ক সফর করে। আর জুলাইয়ে সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শিবানি মস্কো সফরে যান।

সিবিএস সাক্ষাৎকারে আল-শারা বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে সিরিয়ার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের ও ঘনিষ্ঠ। রাষ্ট্রের মৌলিক কাঠামো, জ্বালানি ও খাদ্য সরবরাহে রাশিয়ান সহায়তার ওপর আমরা আংশিকভাবে নির্ভর করি। পাশাপাশি কিছু পুরনো কৌশলগত স্বার্থও এখনো টিকে আছে।’