সোমবার, ১২ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ১১, ২০২৫, ০৫:৪৬ পিএম

রাফাল না কি সুখোই-৩০, কোনটি চালানো কঠিন?

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ১১, ২০২৫, ০৫:৪৬ পিএম

রাফাল না কি সুখোই-৩০, কোনটি চালানো কঠিন?

রাফাল ও সুখোই-৩০ যুদ্ধবিমান। ছবি-সংগৃহীত

পাকিস্তানে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে পরিচালিত সামরিক অভিযানে ভারতের অন্তত পাঁচটি যুদ্ধবিমানকে ভূপাতিত করার দাবি করেছে ইসলামাবাদ।

এর মধ্যে ফ্রান্সের দাসো এভিয়েশনের তৈরি তিনটি রাফাল যুদ্ধবিমান রয়েছে। বিশ্ব সমরাঙ্গনে সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমানটি ব্যাপক প্রশংসিত হলেও ভূপাতিতের ঘটনায় ভারতের দীর্ঘদিনের দম্ভ চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে।

প্রশ্ন উঠেছে, ভারতের সামরিক সক্ষমতা ও দক্ষতা নিয়েও।

ভারতের বিমানবাহিনীর কাছে থাকা রাফাল, তেজস ও সুখোই যুদ্ধবিমান নিয়ে কৌতূহল বেড়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। নেট দুনিয়ায় চলছে চর্চা। মূলত যুদ্ধবিমান ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে শত্রুপক্ষকে বধ করতে বেশ পটু।

সুখোই-৩০ এমকেআই বা রাফাল কীভাবে নির্ভুল লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায়, যুদ্ধবিমানগুলো কীভাবে পরিচালনা করেন বিমানবাহিনীর পাইলটরা? কোন যুদ্ধবিমান চালানো কঠিন এবং কোন যুদ্ধবিমান তুলনামূলক সহজ?

সেই উত্তর অবশ্য সহজ নয়। এখনকার যুদ্ধবিমানগুলো এতটাই অত্যাধুনিক যে, সেগুলো চালানো নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার ওপর যেমন নির্ভর করে তেমনই নির্ভর করে চালকের দক্ষতার ওপর। কিছু যুদ্ধবিমান চালানো যেমন কম ঝুঁকির, তেমনই অনেক যুদ্ধবিমান চালাতে প্রয়োজন বিশেষ অনুশীলনের।

যেসব যুদ্ধবিমান পরিচালনা ‘সহজ’

তালিকার প্রথমেই উল্লেখ করা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ‘এফ-১৬ ফাইটিং ফ্যালকন’ যুদ্ধবিমানটির নাম। চালকবান্ধব যুদ্ধবিমান হিসেবেই পরিচিত এফ-১৬। মাার্কিন নির্মিত যুদ্ধবিমানটি বিগত কয়েক দশক ধরেই ন্যাটো ও বন্ধু দেশগুলোর কাছে প্রিয়।

পাকিস্তানের হাতেও এফ-১৬ যুদ্ধবিমান রয়েছে। অত্যাধুনিক ‘ফ্লাই-বাই-ওয়্যার’ প্রযুক্তি বিমানটিকে সহজাতভাবে স্থিতিশীল রাখে এবং নতুন চালকেরাও সহজেই যুদ্ধবিমানটি চালানোর কৌশল রপ্ত করতে পারেন। এফ-১৬-এর একক ইঞ্জিন যুদ্ধবিমানটির রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা আরও সহজ করে তোলে।

এরপরই রয়েছে সুইডেনের তৈরি যুদ্ধবিমান ‘জেএএস-৩৯ গ্রিপেন’। সুইডিশ মহাকাশ ও প্রতিরক্ষা সংস্থা ‘সাব এবি’র তৈরি যুদ্ধবিমানটি চালানো তুলনামূলকভাবে সহজ বলেই মনে করেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।

একক ইঞ্জিনের যুদ্ধবিমানটি তুলনামূলক হালকা হওয়ার পাশাপাশি বহুমুখী ‘প্রতিভা’র অধিকারী। জেএএস-৩৯-এর স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণ পাইলটের চাপ কমিয়ে দেয়।

বিমানটিকে সহজেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন তারা। আর এ কারণেই বেশ কয়েকটি দেশ তাদের বিমানবহরে জেএএস-৩৯-কে যুক্ত করেছে।

তালিকায় এরপর রয়েছে ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি যুদ্ধবিমান ‘তেজস এমকে১’। চতুর্থ প্রজন্মের ‘লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফ্‌ট’ গোত্রের তেজস-এর ৬৫ শতাংশেরও বেশি যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জাম ভারতীয় সংস্থাগুলোতে তৈরি। হালকা যুদ্ধবিমান উৎকর্ষের মাপকাঠিতে তেজসের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলনায় আসে চীনা জেএফ-১৭।

তবে চীনের জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমানের তুলনায় তেজসের নয়া সংস্করণ প্রযুক্তিগত উৎকর্ষে এগিয়ে বলে একাধিক আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষাবিষয়ক রিপোর্টে জানানো হয়েছে।

‘অ্যাক্টিভ ইলেকট্রনিক্যালি স্ক্যান্‌ড অ্যারে রেডার’ (এএসইএ), মাঝ-আকাশে জ্বালানি ভরার সুবিধা এবং ক্ষেপণাস্ত্রে সজ্জিত তেজসে ‘কোয়াড্রাপ্লেক্স ডিজিটাল এফবিডব্লিউ সিস্টেম’ রয়েছে, যা বিমানকে স্থিতিশীল রাখে।

যেসব যুদ্ধবিমান পরিচালনা ‘বেশ কঠিন’

যদিও সব যুদ্ধবিমান সমানভাবে তৈরি হয় না। কিছু যুদ্ধবিমান নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কঠিন। বহু অভিজ্ঞ পাইলটেরও মাঝেমধ্যে সেগুলো পরিচালনা করতে বেগ পেতে হয়। এ তালিকায় প্রথমেই রয়েছে রাশিয়ার তৈরি ‘মিগ-২১ বাইসন’। ভারতের হাতেও রয়েছে ওই যুদ্ধবিমান।

পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়ন জমানার বিমান নির্মাতা সংস্থা মিকোয়ান-গুরেভিচ (সংক্ষেপে মিগ) অ্যারোস্পেস কর্পোরেশনের নকশায় ১৯৫৫ সালে তৈরি হয়েছিল মিগ-২১ যুদ্ধবিমান।

১৯৬২ সালে চীন যুদ্ধে বিপর্যয়ের পর ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আধুনিক যুদ্ধবিমানের খোঁজ শুরু করে। তখনই নজর পড়ে সোভিয়েতের মিগ-২১-এর ওপর।

কয়েক দফা পরীক্ষার পর ১৯৬৩-র শেষ পর্বে ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে আসে সোভিয়েতে তৈরি যুদ্ধবিমানটির প্রথম পর্যায়ের সংস্করণ মিগ-২১ এফএল।

‘বুড়ো’ সেই যুদ্ধবিমান এখনো ভারতীয় বিমানবাহিনীতে রয়েছে। তবে বেশ কয়েকটি কারণে দুর্নাম রয়েছে মিগ-২১য়ের। ‘ফ্লাই-বাই-ওয়্যার সিস্টেম’ না থাকা বিমানটি স্বয়ংক্রিয় নয়।

পাইলটকে নিজে থেকেই চালনা করতে হয় বিমানটিকে। উচ্চ অবতরণ গতি এবং সংকীর্ণ ককপিট বিপদের ঝুঁকি বাড়ায়।

তালিকায় এরপর রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের এফ-১৪ টমক্যাট যুদ্ধবিমানটি। ভারী ও দুই ইঞ্জিনবিশিষ্ট এফ-১৪ টমক্যাট একসময় মর্কিন বিমান বাহিনীর অন্যতম নির্ভরযোগ্য ‘সদস্য’ ছিল।

কিন্তু পরবর্তীকালে সেটির ব্যবহার বন্ধ হয়। এটি চালানোর জন্য প্রয়োজন হত অভিজ্ঞ চালকদের। বিশেষ করে রণতরীতে অবতরণের সময় এবং ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকত এফ-১৪ কে নিয়ে।

নিয়ন্ত্রণ করা তুলনামূলকভাবে কঠিন এমন যুদ্ধবিমানের তালিকায় রয়েছে রাশিয়ার সুখোই-৩০ এমকেআই-ও। সুখোই গোত্রের সব যুদ্ধবিমানই রাশিয়ায় তৈরি।

তার মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী শ্রেণিগুলোর অন্যতম হলো সুখোই-৩০। ভারতীয় বিমানবাহিনী সুখোই-৩০ যুদ্ধবিমানই ব্যবহার করে। এই ফাইটার জেটে রয়েছে ক্যানার্ড নামে অতিরিক্ত দুটি ডানা।

সুখোই-৩০ অত্যন্ত শক্তিশালী হলেও সেটি চালানো খুব সহজ নয়। দীর্ঘমেয়াদি অভিযানে স্থিতিশীল রাখতে যুদ্ধবিমানটিকে ক্রমাগত নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয় বিমানচালকদের।

ইউরোপের ‘ইউরোফাইটার টাইফুন’ নিয়ন্ত্রণ করাও চালকদের জন্য মাঝেমধ্যে কঠিন হয়ে পড়ে। ‘ফ্লাই-বাই-ওয়্যার সিস্টেম’ না থাকার কারণে যুদ্ধবিমানটি নিয়ন্ত্রণ করা খুব সহজ নয়। বিমানটি চালানোর জন্য কঠোর প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয় চালকদের।

কিন্তু এই দুই তালিকার মধ্যে কোথায় ঠাঁই পাবে ভারতের হাতে থাকা রাফাল যুদ্ধবিমান? ফরাসি প্রতিরক্ষা সংস্থা ‘দাসো অ্যাভিয়েশন’-এর তৈরি রাফাল চালাতে যথেষ্ট অভিজ্ঞতার প্রয়োজন। তবে উচ্চগতির জন্য পরিচিত রাফাল অভিজ্ঞ বিমানচালকদের জন্য একপ্রকার ‘স্বপ্নযান’।

এর ‘স্পেকট্রা ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার সিস্টেম’ শত্রু চিহ্নিত করে দ্রুত নিকেশ করতে পারদর্শী। এক লহমায় মাটি থেকে আকাশের অনেক উঁচুতে উ়ড়ে যেতে পারে রাফাল।

যুদ্ধবিমানটির নিয়ন্ত্রণ আয়ত্ত করতে বেশ সময় লাগে চালকদের। জটিলতা সত্ত্বেও রাফালের ‘ফ্লাই-বাই-ওয়্যার সিস্টেম’ যুদ্ধবিমানের উ়ড়ানকে তুলনামূলকভাবে মসৃণ করে তোলে। তবে আকাশে আধিপত্য বিস্তার, পর্যবেক্ষণ এবং লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুল আঘাত হানার দিক থেকে রাফালের জুড়ি মেলা ভার।

Link copied!