বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের জয়েন্ট চিফ অফ স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা বলেছেন, পাকিস্তান সম্প্রতি ৯৬ ঘণ্টার যুদ্ধে ভারতের বিপক্ষে শুধু নিজস্ব শক্তিই ব্যবহার করেছে।
তার এই মন্তব্য ভারতীয় গণমাধ্যমে চীন পাকিস্তানকে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সামরিক সহায়তা দিয়েছে মর্মে চালানো অপপ্রচারের একটি সময়োপযোগী জবাব বলে মনে করা হচ্ছে।
জেনারেল মির্জা জোর দিয়ে বলেছেন যে, পাকিস্তান ভারতের সমমাত্রার যুদ্ধাস্ত্র ও সরঞ্জাম ব্যবহার করেছে। তার মধ্যে কিছু সামরিক যন্ত্রপাতি ভিন্ন দেশ থেকে সংগৃহীত। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, সাম্প্রতিক যুদ্ধ শুধুমাত্র বিতর্কিত এলাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, তা কোনো আন্তর্জাতিক সীমা লঙ্ঘন করেনি।
তিনি বলেন, ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে কথিত সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জনকে হত্যার পর ভারত পাকিস্তানের ওপর দোষ চাপায়, কিন্তু কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি। যা ইসলামাবাদ অস্বীকার করে স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু ভারত একতরফা সিদ্ধান্তে ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে, পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল করে এবং সিন্ধু নদের পানিচুক্তি স্থগিত করে।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ভারতের এ সকল একতরফা পদক্ষেপকে ‘যুদ্ধ ঘোষণার শামিল’ বলে অভিহিত করা হয়। ৬ ও ৭ মে পাকিস্তানে বিমান হামলা চালায় ভারত। জবাবে পাকিস্তান বুনিয়ান-উন-মারসুস নামে পাল্টা হামলা চালিয়ে ভারতীয় সামরিক স্থাপনায় আক্রমণ করে। পরবর্তীতে মার্কিন মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়।
পাকিস্তানের জেনারেল মির্জা আরো বলেন, এ যুদ্ধ ১৫০ কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলার শামিল। এ যুদ্ধে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং উন্নয়ন ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়ে। তিনি ভারত-পাকিস্তান বিরোধ নিষ্পত্তির কার্যকর ও পরিকল্পিত কৌশলের অপর্যাপ্ততায় অসন্তোষ প্রকাশ করে সতর্ক করেছেন, ভবিষ্যতে আর কোনো যুদ্ধ নির্দিষ্ট অঞ্চলে সীমাবদ্ধ নাও থাকতে পারে।
তিনি ভারতীয় রাজনীতিবিদদের অদূরদর্শী ও উগ্র যুদ্ধাংদেহী মনোভাবের ফলে সমঝোতার ক্ষেত্রগুলো ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে বলেও উল্লেখ করেন।
আপনার মতামত লিখুন :