নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী মালালা ইউসুফজাই নিজের মানসিক সংগ্রামের কথা খোলাখুলি জানিয়েছেন।
তিনি জানান, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধুদের সঙ্গে গাঁজা খাওয়ার এক রাত তাকে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে ১৩ বছর আগের সেই ভয়ংকর মুহূর্তে, যখন তালেবানরা তাকে গুলি করেছিল।
মালালা নতুন আত্মজীবনী ‘ফাইন্ডিং মাই ওয়ে’ প্রকাশের আগে দ্য গার্ডিয়ানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, আমার মস্তিষ্ক পুরো ঘটনাটাকে ভুলে গিয়েছিল। কিন্তু সেই রাতে গাঁজা খাওয়ার পর হঠাৎ সব স্মৃতি ফিরে এল। মনে হচ্ছিল আমি আবারও সবকিছু দেখছি, যেন আমি মারা গিয়েছি আর পরজগতে আছি।
২০১২ সালে পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকায় মেয়েদের শিক্ষার পক্ষে কথা বলায় স্কুলবাসে থাকা অবস্থায় তালেবান বন্দুকধারী তাকে গুলি করে গুরুতর আহত করেন। যুক্তরাজ্যে চিকিৎসা শেষে তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হন।
মালালা জানান, গাঁজা খাওয়ার পর ঘরে ফেরার পথে তিনি জ্ঞান হারান। বন্ধুরা তাকে কোলে করে নিয়ে যায়। এরপর আতঙ্ক, ঘুমহীনতা, উদ্বেগ ও শারীরিক উপসর্গ যেমন ঘাম, কাঁপুনি ও দ্রুত হৃদস্পন্দন দেখা দেয়। থেরাপিস্টের সহায়তায় তিনি নিজের ভয় ও স্মৃতির মুখোমুখি হন।
তিনি বলেন, আমি ভেবেছিলাম, বেঁচে গেছি, আর কিছুই আমাকে ভয় দেখাতে পারবে না। কিন্তু ছোট ছোট জিনিসেও ভয় পেতে শুরু করলাম। পরে বুঝলাম, আসলে সাহস মানে শুধু বাইরের বিপদের সঙ্গে লড়া নয়, নিজের ভেতরের ভয়কেও জেতা।
মালালা জানিয়ে দিয়েছেন, গাঁজা খাওয়ার এই অভিজ্ঞতা নিয়ে খোলাখুলি কথা বলায় সমালোচনা হতে পারে। তবে তার নতুন বইয়েই পাঠক সব উত্তর পাবেন।
নতুন বইয়ে মালালা তার প্রাপ্তবয়স্ক জীবনের বিভিন্ন অধ্যায় তুলে ধরেছেন, যেখানে স্বামী পাকিস্তানের ক্রিকেট ম্যানেজার আসার মালিকের সঙ্গে জীবন এবং তাদের নতুন উদ্যোগ ‘রিসেস’-নারীদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ বাড়ানোর কাজ-ও রয়েছে।
