আল-কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেন ২০০১ সালে আফগানিস্তানের তোরা বোরা পাহাড় থেকে নারীর ছদ্মবেশে বোরকা পড়ে পাকিস্তানে পালিয়ে গিয়েছিলেন- এমন চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইএ)-এর সাবেক কর্মকর্তা জন কিরিয়াকু।
কিরিয়াকু ভারতের সংবাদমাধ্যম এএনআইকে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ৯/১১ হামলার পর আফগানিস্তানে মার্কিন অভিযানের সময় তারা বিন লাদেনকে পাহাড়ে কোণঠাসা করতে সক্ষম হলেও শেষ পর্যন্ত তিনি পালিয়ে যান।
তিনি বলেন, ‘সেন্ট্রাল কমান্ডের অনুবাদক আসলে আল-কায়েদার একজন সদস্য ছিলেন, যে আমাদের ভুল পথে পরিচালিত করেছিলেন।’
নারী সেজে পলায়ন
মার্কিন সেনারা বিন লাদেনকে আত্মসমর্পণ করতে বললে, অনুবাদক সময় চেয়েছিলেন ‘নারী ও শিশুদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য।’ কমান্ডার জেনারেল ফ্র্যাংকস সেই অনুরোধ মঞ্জুর করেন। কিন্তু কিরিয়াকু জানান, এটি ছিল কৌশল- বিন লাদেন নারীর পোশাক পরে অন্ধকারে পিকআপ ট্রাকে চড়ে পাকিস্তানে পালিয়ে যান।
অভিযানের পটভূমি
৯/১১ হামলার পর প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ‘অপারেশন জব্রেকার’ অভিযান শুরু করেন। আফগানিস্তানে লাদেনের অবস্থান শনাক্ত হওয়ার পর তোরা বোরা অঞ্চলে তীব্র বিমান হামলা চালানো হয়। কিন্তু সেনা মোতায়েন সীমিত থাকায় পালানোর পথ বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। কিরিয়াকু উল্লেখ করেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সমন্বয় করতে মোশাররফকে যুক্ত করা প্রয়োজন হয়েছিল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তখন তাকে অর্থ ও সামরিক সহায়তা প্রদান করত।
প্রায় এক দশক পর, ২০১১ সালের ২ মে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে মার্কিন নেভি সিল বাহিনী বিন লাদেনকে হত্যা করে। কিরিয়াকু বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্বৈরশাসকদের সঙ্গে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করত। মোশাররফ আমাদের যা করতে চেয়েছিলেন তা করতে দিত।’
তিনি আরও বলেন, ২০০২ সালে লাহোরে লস্কর–ই–তৈয়বারের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে আল-কায়েদার প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল উদ্ধার করা হয়, যা পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি সংযোগের প্রমাণ। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে তখন বিষয়টি প্রকাশ করা হয়নি।
কিরিয়াকু উল্লেখ করেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান ও আল-কায়েদার ওপর বেশি মনোযোগ দিয়েছে, পাকিস্তানের রাজনৈতিক অবস্থান তাদের প্রয়োজনের তুলনায় গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন