ভেনেজুয়েলার আকাশপথে নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করার পরপরই বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স দেশটি থেকে তাদের ফ্লাইট বাতিল করেছে। একই সময়ে ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নতুন ধরনের অভিযান শুরুর প্রস্তুতির ইঙ্গিতও দিয়েছে ওয়াশিংটন। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর মধ্যেই এ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং সাইট ফ্লাইটরাডার২৪ এবং সিমন বলিভার মাইকেটিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ওয়েবসাইট জানিয়েছে, শনিবার (২২ নভেম্বর) ব্রাজিলের গোল, কলম্বিয়ার অ্যাভিয়াঙ্কা, চিলির লাতাম, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর ক্যারিবিয়ান এয়ারলাইনস এবং ট্যাপ এয়ার পর্তুগাল কারাকাস থেকে ফ্লাইটগুলো বাতিল করেছে।
কলম্বিয়ার বিমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা অ্যারোনটিকা সিভিল এক বিবৃতিতে জানায়, মাইকেটিয়া এলাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি এবং সামরিক কার্যক্রম বৃদ্ধির কারণে সেখানে ফ্লাইট পরিচালনায় ‘সম্ভাব্য ঝুঁকি’ তৈরি হয়েছে।

ট্যাপ এয়ার পর্তুগালও নিশ্চিত করেছে, তারা শনিবার এবং আসন্ন মঙ্গলবারের ফ্লাইট বাতিল করেছে। প্রতিষ্ঠানটি বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানায়, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিমান কর্তৃপক্ষের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ভেনেজুয়েলার আকাশসীমায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।’
স্পেনের আইবেরিয়াও জানিয়েছে, তারা সোমবার থেকে কারাকাস রুটের ফ্লাইট সাময়িকভাবে বন্ধ রাখবে। তবে শনিবার কারাকাস থেকে মাদ্রিদের ফ্লাইটটি পরিকল্পনা অনুযায়ীই ছেড়ে গেছে। আইবেরিয়ার এক মুখপাত্র বলেন, ‘কখন ফ্লাইট পুনরায় চালু করা হবে, পরিস্থিতি দেখে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
অন্যদিকে কোপা এয়ারলাইন্স ও উইঙ্গো শনিবার মাইকেটিয়া থেকে তাদের নির্ধারিত ফ্লাইট চালু রেখেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) তাদের সতর্কবার্তায় জানায়, ভেনেজুয়েলা ও আশপাশের অঞ্চলে ‘নিরাপত্তাহীনতা বাড়ছে এবং সামরিক তৎপরতা বেড়েছে’, যা যেকোনো উচ্চতায় উড়োজাহাজ চলাচলে ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপক সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে। মার্কিন নৌবাহিনীর সবচেয়ে বড় বিমানবাহী রণতরী, অন্তত আটটি যুদ্ধজাহাজ এবং এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান সেখানে মোতায়েন রয়েছে।

এদিকে বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে চারজন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভেনেজুয়েলা-সংশ্লিষ্ট ‘অপারেশনের’ নতুন পর্যায় শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে দুই কর্মকর্তা বলেন, প্রথম ধাপে গোপন অভিযান শুরু হতে পারে, যা মূলত প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর বিরুদ্ধে পরিচালিত হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা জানান, ‘ যুক্তরাষ্ট্রে মাদকের প্রবেশ বন্ধ করতে এবং এ জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রয়োজনে আমেরিকার সব ধরনের সামর্থ্য ব্যবহার করতে প্রস্তুত।’
রয়টার্সকে দুই মার্কিন কর্মকর্তা আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের বিবেচনায় থাকা অপশনগুলোর মধ্যে মাদুরোকে উৎখাতের প্রচেষ্টাও রয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন