সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আল-জাজিরা

প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২৫, ১১:২৪ পিএম

আল-জাজিরার বিশ্লেষণ

হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ: কে হারাল, কী হারাল?

আল-জাজিরা

প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২৫, ১১:২৪ পিএম

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (ইনসেটে)। ছবি- সংগৃহীত

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (ইনসেটে)। ছবি- সংগৃহীত

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। তবে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিলসংক্রান্ত সিদ্ধান্তের ওপর সাময়িক স্থগিতাদেশ দিয়েছেন একজন মার্কিন ফেডারেল বিচারক। এই রায়টি আসে হার্ভার্ডের জরুরি আবেদনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই।

বিশ্ববিদ্যালয়টি দাবি, এই সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থী ও প্রতিষ্ঠানের জন্য ‘ব্যাপক ক্ষতির’ কারণ হবে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এই মামলাটি করে মার্কিন স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা বিভাগের (ডিএইচএস) প্রধান ক্রিস্টি নোমের চিঠির জবাবে।

চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করার অনুমোদন (সার্টিফিকেশন) বাতিল করা হয়। ইতোমধ্যে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের এখন অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর হতে হবে, নাহলে তারা যুক্তরাষ্ট্রে থাকার বৈধতা হারাবেন।

বৃহস্পতিবারে (২২ মে) ঘোষণা করা সরকারের এই সিদ্ধান্ত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে চলমান উত্তেজনার চরম পর্যায়।

কী ছিল সরকারের সিদ্ধান্ত?

ক্রিস্টি নোম হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবারকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, হার্ভার্ডের ‘স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রাম’ (এসইভিপি) সনদ বাতিল করা হয়েছে, যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হয়েছে। ফলে হার্ভার্ড এখন আর নতুন কোনো বিদেশি শিক্ষার্থীকে এফ-১ বা জে-১ ভিসার আওতায় ভর্তি করাতে পারবে না।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের একাংশ। ছবি- সংগৃহীত

যারা আগে থেকেই এ ভিসায় হার্ভার্ডে পড়ছেন, তাদের অন্য কোনো অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করতে হবে— নাহলে তারা যুক্তরাষ্ট্রে থাকার আইনি অধিকার হারাবেন। নোম অভিযোগ করেছেন, হার্ভার্ড ‘সহিংসতা উসকে দিচ্ছে, ইহুদি-বিরোধিতা প্রশ্রয় দিচ্ছে ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সমন্বয় করছে’।

ট্রাম্প প্রশাসন কেন হার্ভার্ডকে লক্ষ্যবস্তু করছে?

গত বছর গাজায় ইসরায়েলের হামলার বিরুদ্ধে হার্ভার্ডসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের পর থেকেই উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ডকে ‘অসুরক্ষিত ও শত্রুভাবাপন্ন’ পরিবেশ তৈরির অভিযোগে অভিযুক্ত করে।

সরকার বিশ্ববিদ্যালয়টির বহুত্ববাদ, বৈচিত্র্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতিরও কঠোর সমালোচনা করে। একই সঙ্গে চীনের সঙ্গে কথিত সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে— যদিও কোনো প্রমাণ প্রকাশ করা হয়নি।

গত এপ্রিল মাসে হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে ইহুদি-বিরোধিতা দমন না করায় যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রায় ২.৩ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল অনুদান স্থগিত করে। সরকারের দাবি ছিল, হার্ভার্ডের মধ্যে ‘মতপার্থক্যের বৈচিত্র্য নিশ্চিত করতে’ বাইরের নিরীক্ষা চালানো উচিত—যা বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যাখ্যান করে।

এরপর মে মাসে মার্কিন শিক্ষামন্ত্রী লিন্ডা ম্যাকমাহন চিঠিতে লেখেন, ‘হার্ভার্ড এখন আর কোনো ফেডারেল অনুদান পাবে না। তারা চাইলে নিজেদের বিশাল তহবিল ও ধনাঢ্য প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অনুদানের ওপর নির্ভর করে বেসরকারিভাবে চলতে পারে।’

গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে হার্ভার্ডে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি- সংগৃহীত

মার্কিন প্রশাসন মূলত দুই ভাবে হার্ভার্ডের বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করতে পারে। এক. বিশ্ববিদ্যালয়ের এসইভিপি সার্টিফিকেশন বাতিল করে (যা বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হয়)। এই সার্টিফিকেশন না থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় আর আই-২০ ফর্ম দিতে পারবে না। আর এটা ছাড়া বিদেশি শিক্ষার্থীরা ভিসার জন্য আবেদনও করতে পারেন না।

দুই. মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর সরাসরি শিক্ষার্থীদের ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করতে পারে, যদি তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এসইভিপি অনুমোদন না থাকে।

কতজন শিক্ষার্থী ভুক্তভোগী হবেন?

বর্তমানে হার্ভার্ডে প্রায় ৬ হাজার ৮০০ জন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। এই সংখ্যা মোট শিক্ষার্থীর ২৭ শতাংশ। এখন তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বদলাতে হবে অথবা যুক্তরাষ্ট্রের মাটি ছাড়তে হবে।

এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের মধ্যে চীন, ভারত ও কানাডার শিক্ষার্থীর সংখ্যাই বেশি। গত চার বছরে হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৬.৭৫ শতাংশ বেড়েছে।

আর্থিক দিক বিবেচনায় বিষয়টি কেমন?

প্রতি বিদেশি শিক্ষার্থী গড়ে বছরে ৮৬ হাজার ৯২৬ ডলার খরচ করে। এর মধ্যে টিউশন, হোস্টেল ও অন্যান্য ফি অন্তর্ভুক্ত। সব শিক্ষার্থী পূর্ণ ফি দিলে হার্ভার্ড বছরে প্রায় ৫৯১ মিলিয়ন ডলার আয় করে।

অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা মার্কিন অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখে— ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে তারা প্রায় ৪৩.৮ বিলিয়ন ডলার মার্কিন অর্থের অঙ্কে যোগ করেছিল।

হার্ভার্ড কী বলছে?

হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্তকে ‘অবৈধ ও ধ্বংসাত্মক’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, বিদেশি শিক্ষার্থী ও গবেষকদের পাশে তারা থাকবেন। এক বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়টি জানিয়েছে, ‘আমরা আমাদের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সব ধরনের সহায়তা ও সুরক্ষা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’। পাশাপাশি তারা আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতিও নিচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের সহায়তার জন্য একটি পরামর্শ কেন্দ্রও খুলেছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, যাতে তারা আইনি অধিকার ও প্রতিষ্ঠান বদলানোর প্রক্রিয়াগুলো বুঝতে পারে।

Link copied!