সামরিকভাবে অবরুদ্ধ গাজায় ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার পথে আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে গ্রেপ্তার হন গ্রেটা থুনবার্গ। আর সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে নিয়ে আবারও বিদ্রূপাত্মক মন্তব্য করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘গ্রেটা একজন অদ্ভুত, রাগী তরুণী। সে আসলেই রাগ করে কি না বোঝা মুশকিল, তবে তার রাগ নিয়ন্ত্রণ শেখা উচিত- এটাই আমার প্রধান পরামর্শ।’
গ্রেটার ‘রাগ’ নিয়ে ট্রাম্পের কটাক্ষ নতুন নয়। ২০১৯ সালে টাইম ম্যাগাজিন তাকে ‘পার্সন অব দ্য ইয়ার’ ঘোষণার পর ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘সে যেন রাগ নিয়ন্ত্রণ করে এবং তার বন্ধুর সঙ্গে গিয়ে একটা পুরোনো সিনেমা দেখে।’
বছর কয়েক পর ফের একই সুরে কথা বললেন তিনি তাও এমন এক সময়ে, যখন ইসরায়েলি নৌবাহিনীর হাতে আটক হওয়ার দাবি করছেন গ্রেটা নিজেই।
‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন’-এর অংশ হয়ে ‘ম্যাডলিন’ নামের একটি জাহাজে করে গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন ২২ বছর বয়সি সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ।
কিন্তু ইসরায়েলি নৌবাহিনী সেই জাহাজকে আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকেই থামিয়ে দেয় এবং যাত্রীদের আটক করে নিয়ে যায়।
পরে এক ভিডিও বার্তায় গ্রেটা বলেন, ‘আমরা এখন ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে অপহৃত। এটি দখলদার বাহিনীর কাজ।’ তিনি বন্ধু, পরিবার এবং সুইডিশ সরকারের কাছে নিজেকে ও অন্যদের দ্রুত মুক্ত করার আহ্বান জানান।
পরিস্থিতি নিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি দেখেছি কী হয়েছে। ইসরায়েলের নিজেরই এখন যথেষ্ট সমস্যা আছে, তাদের আর গ্রেটা থুনবার্গকে অপহরণ করে সময় নষ্ট করার দরকার নেই।’
এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি, তবে গ্রেটার বিষয়টি আলোচনায় আসেনি।’
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরে এক্স (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট করে জানায়, ‘সেলিব্রিটিদের সেলফি ইয়ট নিরাপদে ইসরায়েলি উপকূলে এসেছে। যাত্রীরা শিগগিরই নিজ নিজ দেশে ফিরবেন।’
পাশাপাশি যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও কনস্যুলার সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানানো হয়।
জলবায়ু পরিবর্তন, দখলদারিত্ব ও যুদ্ধবিরোধী অবস্থান নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বরাবরই সোচ্চার গ্রেটা থুনবার্গ।
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় সাধারণ ফিলিস্তিনি মানুষের হতাহতের ঘটনায় তিনি একাধিকবার ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সেই ধারাবাহিকতায়ই তিনি এই সহায়তা মিশনে অংশ নিয়েছিলেন বলে জানায় আন্তর্জাতিক কয়েকটি সংহতি সংগঠন।
সূত্র- ওয়াশিংটন টাইমস, দ্য মিরর ইউএস
আপনার মতামত লিখুন :