ঢাকা বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫

তাইওয়ানকে পাশ কাটিয়ে চীন সফরের কথা ভাবছেন ট্রাম্প

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০২৫, ০৭:১৬ পিএম
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি- সংগৃহীত

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাই চিং-তে মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার তিনটি মিত্র দেশের নির্ধারিত সফর বাতিল করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে তার পরিকল্পিত যাত্রাবিরতি অনুমোদন না পাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে চীন সফরের কথা ভাবছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।

আগস্টের শুরুতে লাই প্যারাগুয়ে, গুয়াতেমালা এবং বেলিজ সফরের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ভ্রমণের প্রথম ও শেষ ধাপে নিউ ইয়র্ক এবং ডালাসে যাত্রাবিরতির পরিকল্পনা ছিল। তবে বিষয়টির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ তিনটি সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদপত্রটি জানিয়েছে, মার্কিন কর্মকর্তারা নিউ ইয়র্কে তার অবস্থানের বিরোধিতা করলে পুরো সফর বাতিল করা হয়।

তাইওয়ান সরকার এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। যুক্তরাষ্ট্রও ঘটনাটি নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো বক্তব্য দেয়নি।

লাইয়ের অফিসে কখনও আনুষ্ঠানিকভাবে তার ল্যাটিন আমেরিকা সফরের ঘোষণা দেয়নি। তবে সোমবার তার অফিস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক আলোচনা এবং দক্ষিণ তাইওয়ানে টাইফুনের পর পুনর্গঠন কার্যক্রমে মনোযোগ দেওয়ার জন্য তিনি সব বিদেশ সফর বাতিল করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে স্বীকৃতি না দেওয়ায় দেশটির প্রেসিডেন্টরা আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়াশিংটন সফর করতে পারেন না। তবে বহু বছর ধরে তাইওয়ানের নেতারা যুক্তরাষ্ট্রে ট্রানজিট স্টপ ব্যবহার করে ওয়াশিংটনের বাইরের শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

২০২৩ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন নিউ ইয়র্ক ও লস অ্যাঞ্জেলেসে যাত্রাবিরতি করেছিলেন। ওই সফরের পর বেইজিং ক্ষোভ প্রকাশ করতে তাইওয়ান প্রণালীতে সামরিক মহড়া চালায়। গণতান্ত্রিক তাইওয়ানকে নিজ ভূখণ্ডের অংশ বলে দাবি করে চীন।

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের যুক্তরাষ্ট্রে পরিকল্পিত যাত্রাবিরতি বাতিলের খবর প্রকাশিত হয়েছে এমন সময়ে, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চীন সফরের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা বাড়ছে। ট্রাম্প বলেছেন, তিনি চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে কোনো ‘শীর্ষ সম্মেলন’ চান না, তবে শি’র আমন্ত্রণে তিনি চীন সফরে যেতে পারেন।

সোমবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘ফেক নিউজ বলছে আমি চীনের প্রেসিডেন্ট শির সঙ্গে একটি ‘শীর্ষ সম্মেলন’ চাইছি। এটা ঠিক নয়। আমি কিছুই চাইছি না! আমি চীন যেতে পারি, কিন্তু শুধুমাত্র প্রেসিডেন্ট শির আমন্ত্রণে, যা ইতোমধ্যেই এসেছে।’

মার্কিন প্রশাসন বা তাইওয়ান সরকার এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ৩১ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য এশিয়া-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা শীর্ষ সম্মেলনের সময় চীন সফরের পরিকল্পনা করতে পারেন।

এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে কি না তা মূলত নির্ভর করছে চলমান বাণিজ্য আলোচনার অগ্রগতির ওপর। বছরের শুরুতে শুরু হওয়া শুল্ক যুদ্ধের সমাধান খুঁজতে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।

মার্কিন ও চীনা কর্মকর্তারা বর্তমানে সুইডেনের স্টকহোমে বৈঠক করছেন। ১২ আগস্ট ‘যুদ্ধবিরতি’ শেষ হওয়ার আগে একটি শুল্ক চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে। তবে রপ্তানি নিয়ন্ত্রণসহ বেশ কয়েকটি জটিল বিষয় আলোচনাকে বিলম্বিত করতে পারে বলে কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে।