ইরান-সংশ্লিষ্ট শতাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সমুদ্রগামী জাহাজের ওপর বুধবার নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ। এটিকে তারা ২০১৮ সালের পর ‘ইরান-সংশ্লিষ্ট সবচেয়ে বড় নিষেধাজ্ঞা কার্যক্রম’ বলে উল্লেখ করেছে। সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ বলছে, নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে রয়েছে অর্ধশতাধিক জাহাজ। সেগুলো ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির উপদেষ্টার ছেলে মোহাম্মদ হোসেইন শামখানি নিয়ন্ত্রিত একটি বৃহৎ শিপিং সাম্রাজ্যের অংশ।
এক বিবৃতিতে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ জানায়, ‘এই নেটওয়ার্ক ইরান-রাশিয়া থেকে তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যসহ অন্যান্য পণ্য বিশ্বজুড়ে ক্রেতাদের কাছে পরিবহণ করে থাকে। এ থেকে তারা বিপুল অঙ্কের মুনাফা অর্জন করে।’
ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বলেন, ‘শামখানি পরিবারের শিপিং সাম্রাজ্য ইরান সরকারপন্থি অভিজাতদের প্রভাব কাজে লাগিয়ে বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছে এবং তারা বিপজ্জনক কর্মকাণ্ডে অর্থ জোগান দেয়।’
বেসেন্ট জানান, ১১৫টি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও জাহাজের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, যা ট্রাম্প প্রশাসনের ‘ম্যাক্সিমাম প্রেসার’ নীতির পর থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় নিষেধাজ্ঞা।
মার্কিন ট্রেজারির বিবৃতি অনুযায়ী, শামখানি পরিবার ইরানের ক্রুড অয়েল রপ্তানির একটি বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করে। মোহাম্মদ হোসেইনের বাবা আলি শামখানি আয়াতুল্লাহ খামেনির উপদেষ্টা। তাকে যুক্তরাষ্ট্র ২০২০ সালে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনে।
বিবৃতিতে বলা হয়, পরিবারটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিলাসবহুল সম্পত্তির মালিক এবং বিদেশি পাসপোর্ট অর্জন করেছে, যার মাধ্যমে তারা ‘অজ্ঞাতভাবে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে।’
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে: ১৫টি শিপিং কোম্পানি, ৫২টি জাহাজ, ১২ জন ব্যক্তি ও ৫৩টি প্রতিষ্ঠান, যারা ১৭টি দেশে নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর সাথে জড়িত, যার মধ্যে রয়েছে পানামা, ইতালি ও হংকং।
এক মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ইরানের তেল বিক্রি অনেক কঠিন হয়ে যাবে, তবে এতে বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহে উল্লেখযোগ্য বিঘ্ন ঘটবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
এই নিষেধাজ্ঞার পরেই ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে নতুন কোনো আগ্রাসন হলে তার দৃঢ় প্রতিক্রিয়া দেওয়া হবে। সোমবার সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে আরাগচি বলেন, ‘ইরানিরা কখনো বাইরের শক্তির কাছে মাথানত করেনি। তারা কেবল সম্মানজনক কথারই জবাব দেয়।’