ঢাকা শনিবার, ০৯ আগস্ট, ২০২৫

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরোকে ধরিয়ে দিলে ৫ কোটি ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২৫, ১১:২৭ পিএম
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। ছবি- সংগৃহীত

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মাদক চোরাচালানকারী আখ্যা দিয়ে তার গ্রেপ্তারে সহায়ক তথ্যের জন্য পুরস্কারের পরিমাণ দ্বিগুণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আড়াই কোটি ডলার থেকে বাড়িয়ে এই পুরস্কার এখন পাঁচ কোটি ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই মাদুরোর সমালোচক। চলতি বছরের জানুয়ারিতে বিতর্কিত নির্বাচনে পুনর্নির্বাচিত হন মাদুরো, যেখানে ভোট কারচুপির অভিযোগ ওঠে এবং আন্তর্জাতিক মহল ব্যাপকভাবে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে।

মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি বৃহস্পতিবার জানান, মাদুরো সরাসরি মাদক চোরাচালান চক্রের সঙ্গে যুক্ত। তিনি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (ডিইএ) মাদুরো ও তার সহযোগীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৩০ টন কোকেন জব্দ করেছে, যার মধ্যে প্রায় সাত টনের সঙ্গে মাদুরোর সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে।

অন্যদিকে, ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভান গিল বলেন, “এটি ট্রাম্পের সাথে জেফরি এপস্টিনের ইস্যু থেকে মনোযোগ সরানোর ‘হতাশাজনক প্রচেষ্টা’।”

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে মার্কিন সরকার মাদুরো ও ভেনেজুয়েলার বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ, দুর্নীতি এবং মাদক চোরাচালানের অভিযোগ আনে। তখন মার্কিন বিচার বিভাগ অভিযোগ করেছিল, মাদুরো কলম্বিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী ফার্কের সঙ্গে কাজের মাধ্যমে কোকেনকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।

বন্ডি আরও অভিযোগ করেন, মাদুরো ভেনেজুয়েলার গ্যাং ‘ট্রেন দে আরাগুয়া’—যাকে ট্রাম্প প্রশাসন সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে, এবং মেক্সিকোভিত্তিক শক্তিশালী অপরাধচক্র সিনালোয়া কার্টেলের সঙ্গে সমন্বয় করেছেন।

২০১৩ সালে হুগো শাভেজের মৃত্যুর পর ক্ষমতায় আসা মাদুরো বিরোধী গোষ্ঠী দমন ও সহিংসতার মাধ্যমে ভিন্নমত দমনের অভিযোগে বহুবার সমালোচিত হয়েছেন। গত বছরের বিতর্কিত নির্বাচনের পর বিক্ষোভ দমন করেও তিনি ক্ষমতা ধরে রেখেছেন।

এরই মধ্যে গত জুনে ভেনেজুয়েলার সাবেক সামরিক গোয়েন্দা প্রধান হুগো কারভাজাল যুক্তরাষ্ট্রে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন। ‘এল পোয়ো’ (দ্য চিকেন) নামে পরিচিত এই গোয়েন্দা প্রধান মাদুরোর বিরোধিতায় সেনাবাহিনীকে আহ্বান জানিয়ে দেশত্যাগ করেন এবং পরে মাদ্রিদে গ্রেপ্তার হন।

প্রথমে অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরে তিনি দোষ স্বীকার করেন। অনেকেই ধারণা করছেন, কম সাজা পেতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করে মাদুরো সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করেছেন।

চলতি বছরের শুরুর দিকে মাদুরোর পুনর্নির্বাচনের পর যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার সরকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।