রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যদি শিগগিরই না থামে, তাহলে আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে মস্কোর ওপর উচ্চমাত্রার শুল্ক কিংবা বড় আকারের নিষেধাজ্ঞা অথবা উভয়ই আরোপের হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার (২২ আগস্ট) সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে এই আল্টিমেটাম দিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের হামলায় ইউক্রেনে মার্কিন সরকারের মালিকানাধীন একটি কারখানা ধ্বংস হয়েছে। শুক্রবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ট্রাম্প বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি আনন্দিত নই এবং শুধু এই ঘটনাই নয়, এই যুদ্ধের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো কিছুর ওপরেই আমি খুশি নই। আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে আমরা এই সংকট সমাধানের একটা পথ খুঁজে বের করব। যদি এমনটা পারি, কেবল তাহলেই আমি খুশি হবো।’
ট্রাম্প বলেন, ‘যদি দু’সপ্তাহের মধ্যে সংকট থেকে উত্তরণের পরিস্থিতি না আসে, সেক্ষেত্রে আমাকে (রাশিয়ার বিষয়ে) একটা সিদ্ধান্তে আসতে হবে এবং সেটি হবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা উচ্চমাত্রার শুল্ক, অথবা বড় আকারের নিষেধাজ্ঞা কিংবা উভয়েই হতে পারে।’
প্রসঙ্গত, ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণের পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধাবসানকে অগ্রাধিকার দেবেন বলে ঘোষণা করেন ট্রাম্প। সেই অনুযায়ী, গত আট মাস ধরে এই যুদ্ধ থামাতে চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে গত আট মাসে কয়েকবার টেলিফোনে আলোচনা করার পর গত ১৫ আগস্ট আলাস্কায় তার সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। সেই বৈঠকের তিন দিন পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেন ট্রাম্প।
জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক শেষে ট্রাম্প বলেছিলেন, পুতিন এবং জেলেনস্কি উভয়ের সঙ্গেই তার বৈঠক খুবই চমৎকার হয়েছে এবং শিগগিরই পুতিন-জেলেনস্কি ও তার সমন্বয়ে একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে। তিনি আরও বলেন, যে পুতিন এবং জেলেনস্কির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ারও জোর সম্ভাবনা আছে।
তবে সম্প্রতি ট্রাম্পের এই বক্তব্য নাকচ করে দিয়েছেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে এখন পর্যন্ত কোনো বৈঠকের পরিকল্পনা হয়নি এবং বৈঠক যে শিগগিরই হবে এমন সম্ভাবনাও ক্ষীণ।
এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এই বৈঠক হওয়ার জন্য মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে কিছু ইস্যুতে প্রাথমিক সমঝোতা প্রয়োজন। কিন্তু যেসব ইস্যুতে সমঝোতা প্রয়োজন—সেসবের প্রতিটিতেই জেলেনস্কির অবস্থান নেতিবাচক।
ল্যাভরভের এই বক্তব্য প্রচারের পর এই প্রতিক্রিয়া জানালেন ট্রাম্প।