ঢাকা বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা-গ্রিনকার্ড ব্যবস্থায় আসছে বড় পরিবর্তন

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২৫, ০৩:৫৭ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রে এইচ-১বি ভিসা ও গ্রিনকার্ড ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। ছবি- সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে এইচ-১বি ভিসা ও গ্রিনকার্ড নিয়ে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন দেশটিতে বসবাসরত লাখো বিদেশি কর্মী ও শিক্ষার্থী। মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লাটনিক বর্তমান এইচ-১বি ভিসা ব্যবস্থাকে ‘প্রতারণা’ আখ্যা দিয়ে বলেন, শিগগিরই এ ব্যবস্থার পরিবর্তন করা হবে। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

এদিকে, এই পদক্ষেপে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে ভারতীয় কর্মী ও শিক্ষার্থীদের ওপর, যারা বছরের পর বছর এইচ-১বি ভিসা বরাদ্দের প্রায় ৭০ শতাংশ দখল করে আসছেন।

মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লাটনিক বলেন, ‘বর্তমান এইচ-১বি ভিসা পদ্ধতি একটি প্রতারণা, যা মার্কিন চাকরির সুযোগ দখলে বিদেশিদের সহায়তা করে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মীদের নিয়োগই হওয়া উচিত সব বড় মার্কিন প্রতিষ্ঠানের অগ্রাধিকার। এখন সময় এসেছে মার্কিনিদের চাকরির সুযোগ দেওয়ার।’

ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, এই পরিবর্তন বিশাল প্রভাব ফেলবে। এর প্রয়োজনীয়তার কারণ হিসেবে তিনি মার্কিন নাগরিকদের গড় আয়ের সঙ্গে গ্রিনকার্ডধারীদের আয়ের বৈষম্যের কথা উল্লেখ করেন।

মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “আমি এইচ-১বি ব্যবস্থা পরিবর্তনের সঙ্গে যুক্ত, কারণ এটি ভয়াবহ। আমরা গ্রিনকার্ডও পরিবর্তন করতে যাচ্ছি। গড়পড়তায় একজন মার্কিনি বছরে ৭৫ হাজার ডলার আয় করেন, অথচ গ্রিনকার্ডধারীদের গড় আয় ৬৬ হাজার ডলার। তাহলে আমরা কেন নিচের স্তরের মানুষকে আনছি? ডোনাল্ড ট্রাম্প এটিই বদলাবেন। এ কারণেই আসছে ‘গোল্ড কার্ড’। আমরা সেরা মানুষদের বেছে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সুযোগ দেব।”

প্রস্তাবিত পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে লটারিভিত্তিক এইচ-১বি বরাদ্দ বাতিল এবং মজুরির ওপর ভিত্তি করে ভিসা প্রদান, যেখানে বেশি আয়ের আবেদনকারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই এ সংক্রান্ত একটি খসড়া নিয়ম অনুমোদন করেছে।

এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিদেশি কর্মী ও শিক্ষার্থীদের জন্য নিয়মকানুন কঠোর করতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বছরের শুরুর দিকে ভিসা সংক্রান্ত নানা কারিগরি সমস্যায় সহায়তা দেওয়া ‘সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস (সিআইএস) অম্বাডসম্যান’ অফিসও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

আগের নিয়মের ব্যতিক্রম হিসেবে এখন থেকে এইচ-১বি ভিসাধারীদের ব্যক্তিগত তথ্য যেমন বায়োমেট্রিক্স ও বাসার ঠিকানা জমা দিতে হচ্ছে।

এদিকে, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের মন্তব্য, গ্রিনকার্ড কোনো ব্যক্তিকে যুক্তরাষ্ট্রে অনির্দিষ্টকাল থাকার অধিকার দেয় না। আগামী দিনে গ্রিনকার্ডের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন প্রশ্ন উঠেছে। আর ট্রাম্পের ঘোষিত ‘গোল্ড কার্ড’ উদ্যোগকে সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে দেখা হচ্ছে।