দক্ষ বিদেশি কর্মীদের জন্য জনপ্রিয় এইচ-১বি ভিসা প্রোগ্রামে আবেদনকারীদের কাছ থেকে ১ লাখ ডলার ফি আদায়ের একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এইচ-১বি প্রোগ্রামের ‘অপব্যবহার’ বন্ধে পদক্ষেপ হিসেবে এ ফি আরোপ করা হয়েছে এবং ফি না দিলে প্রবেশ সীমিত করা হবে।
বহু সমালোচক দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছেন, এইচ-১বি ভিসা মার্কিন কর্মীদের চাকরি হুমকির মুখে ফেলে। তবে এর পক্ষে সমর্থকেরা বলছেন, এ প্রোগ্রাম বিশ্বজুড়ে মেধাবী কর্মীদের যুক্তরাষ্ট্রে আনতে সহায়ক।
আরেক আদেশে ট্রাম্প একটি নতুন ‘গোল্ড কার্ড’ চালু করেছেন, যেখানে প্রায় ১০ লাখ পাউন্ড থেকে শুরু হওয়া ফি’র বিনিময়ে নির্দিষ্ট কিছু অভিবাসীর জন্য দ্রুত ভিসা পাওয়ার সুযোগ থাকবে।
ওই দিন হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের পাশে ছিলেন মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লাটনিক। তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর এইচ-১বি ভিসার জন্য ১ লাখ ডলার লাগবে এবং বড় বড় কোম্পানিগুলো এতে রাজি। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। আপনারা যদি কাউকে প্রশিক্ষণ দিতে চান, তাহলে আমাদের দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য স্নাতক হওয়া তরুণদের প্রশিক্ষণ দিন, বিদেশিদের এনে চাকরি কেড়ে নেবেন না।’
২০০৪ সাল থেকে এইচ-১বি ভিসার সংখ্যা বছরে ৮৫ হাজারে সীমিত রাখা হয়েছে। এতদিন পর্যন্ত এই ভিসার জন্য বিভিন্ন প্রশাসনিক ফি মিলিয়ে প্রায় ১ হাজার ৫০০ ডলার দিতে হতো।
মার্কিন অভিবাসন দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আগামী অর্থবছরের জন্য এইচ-১বি ভিসার আবেদন প্রায় ৩ লাখ ৫৯ হাজারে নেমে এসেছে, যা গত চার বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। গত অর্থবছরে এই প্রোগ্রামের সর্বোচ্চ সুবিধাভোগী ছিল অ্যামাজন, এরপর টাটা, মাইক্রোসফট, মেটা, অ্যাপল ও গুগল।
ওয়াটসন ইমিগ্রেশন ল’র প্রতিষ্ঠাতা আইনজীবী তাহমিনা ওয়াটসন বিবিসিকে বলেন, ‘এই ফি অনেক ক্লায়েন্টের জন্য শেষ আঘাত হতে পারে। প্রায় সবাই এ থেকে বাইরে চলে যাবে। ছোট ও মাঝারি আকারের কোম্পানিরা বলছে, তারা উপযুক্ত কর্মী পাচ্ছে না।’
এইচ-১বি ভিসা নিয়ে বিতর্ক ট্রাম্পের দল এবং সমর্থকদের মধ্যে আগেও বিভাজন তৈরি করেছিল। সমর্থকরা ভিসাকে সমর্থন করলেও সাবেক স্ট্রেটেজিস্ট স্টিভ ব্যাননসহ অনেকে এর সমালোচনা করেছেন।
২০১৭ সালে প্রথম মেয়াদের শুরুতে ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে এইচ-১বি ভিসার আবেদন প্রক্রিয়ায় বাড়তি নজরদারি চালু করেন। এরপর ২০১৮ অর্থবছরে আবেদন প্রত্যাখ্যানের হার ২৪ শতাংশে উঠে যায়, যেখানে ওবামা আমলে তা ছিল ৫ থেকে ৮ শতাংশ এবং জো বাইডেনের সময় ২ থেকে ৪ শতাংশ।
এইচ-১বি প্রোগ্রামে নতুন বিধিনিষেধের সম্ভাবনা বিশেষ করে ভারতসহ বিভিন্ন দেশে উদ্বেগ তৈরি করেছে, যেখান থেকে এই ধরনের ভিসার সর্বাধিক আবেদন আসে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন