মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতিসংঘে বক্তব্য দিতে গিয়ে মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) পরপর তিনটি যান্ত্রিক বিভ্রাটের মুখে পড়েন। বুধবার এসব বিভ্রাটকে ‘ত্রিমুখী নাশকতা’ আখ্যা দিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি। ঘটনা তিনটি হলো- জাতিসংঘ সদর দপ্তরের চলন্ত সিঁড়িতে ওঠার পর সেটি বন্ধ হয়ে যাওয়া, সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বক্তব্য দেওয়ার সময় টেলিপ্রম্পটারটিও (বক্তব্যের লিখিত রূপ ভেসে ওঠার স্ক্রিন) কাজ না করা এবং সাউন্ড সিস্টেমেও বিভ্রাট দেখা দেওয়া।
সেই সময় ট্রাম্প ঘটনাটি এড়িয়ে গিয়েছিলেন, বক্তৃতা দেওয়ার সময় ট্রাম্প ঘটনাটিকে হালকাভাবে নিয়ে রসিকতাও করেছিলেন। তবে পরদিন সুর পাল্টে এটিকে ‘অত্যন্ত ভয়ংকর তিনটি ঘটনা’ হিসেবে আখ্যা দেন তিনি। ট্রাম্প দাবি করেন, বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেট সার্ভিস তদন্ত শুরু করেছে।
নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘এটা কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয়, এটি একটি ত্রিমুখী নাশকতা। আমি এই চিঠির একটি অনুলিপি জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে পাঠাচ্ছি ও অবিলম্বে তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’
ঘটনা তিনটির প্রথমটি ঘটে মঙ্গলবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বক্তব্য দেওয়ার আগে। ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প এস্কেলেটরে ওঠার পরপরই সেটি হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেলে তাদের হেঁটে ওপরে উঠতে হয়। ট্রাম্প লেখেন, ‘অবিশ্বাস্য যে মেলানিয়া আর আমি সামনের দিকে পড়ে যাইনি। স্টিলের ধারালো ধাপগুলোতে মুখ থেঁতলে যেত। আমরা শক্ত করে হাতল না ধরলে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটত।’
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, এস্কেলেটর বন্ধ হওয়ার ঘটনাটি ‘পুরোপুরি তোড়জোড়’। এ সময় তিনি সানডে টাইমস-এর একটি প্রতিবেদন উল্লেখ করেন যেখানে বলা হয়েছিল, জাতিসংঘের কিছু কর্মী এর আগে ট্রাম্পকে বিব্রত করতে এস্কেলেটর বন্ধ করার রসিকতা করেছিল। ‘যারা এটা করেছে তাদের গ্রেপ্তার করা উচিত!’—লিখেছেন ট্রাম্প।
এ ছাড়া তিনি দাবি করেন, বক্তৃতার সময় শব্দব্যবস্থা ‘পুরোপুরি বন্ধ’ ছিল। ফলে শ্রোতারা কেবল অনুবাদকের হেডফোন ব্যবহার করলেই বক্তব্য শুনতে পারছিলেন। জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মাইক ওয়াল্টজও তদন্ত দাবির প্রতি সমর্থন দিয়ে বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা অগ্রহণযোগ্য। এগুলো একটি ভেঙে পড়া প্রতিষ্ঠানের পরিচায়ক এবং গুরুতর নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করে।’
অন্যদিকে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক জানান, ট্রাম্পের প্রতিনিধি দলের একজন ভিডিওগ্রাফার ভুলবশত জরুরি স্টপ ফাংশন চালু করার কারণে এসকেলেটরের ত্রুটি দেখা দিয়েছিল। আরেক মুখপাত্র ফারহান আজিজ হক বলেন, টেলিপ্রম্পটারটি ট্রাম্পের নিজস্ব দলের ছিল এবং তিনি তদন্তের বিষয়টি হোয়াইট হাউসে পাঠিয়েছেন।